আগামী শুক্রবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর নামে চেয়ার স্থাপনের ঘোষণা দিতে পারেন
মমতা। তবে সরকারিভাবে এখনো এই বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। বরং মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল হলদিয়ায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারকে কলকাতায়
বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানোর কথা বলেছেন।
তবে দুদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা
বিষয়টিকে মমতার কূটনীতি বলে মনে করছেন। তাঁদের মতে, বঙ্গবন্ধুর নামে চেয়ার
স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে শীতল সম্পর্ক খানিকটা উষ্ণ করতে
চাইছেন তিনি। বিশেষ করে তিস্তা ও ছিটমহল চুক্তি বিষয়ে তৃণমূল নেত্রীর
ভূমিকা বাংলাদেশের মানুষ ও আওয়ামী লীগ সরকার ভালোভাবে নেয়নি। অন্যদিকে
বর্ধমান ইসু্য ছাড়া সারদাকাণ্ডে তাঁরই দলের একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে
বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরির জন্য টাকা পাঠানোর খবর প্রকাশিত হওয়ার পর মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ চাপে পড়েছেন।
কংগ্রেস সরকার মমতাকে জোট সঙ্গী হিসেবে গুরুত্ব দিলেও বিজেপি যে তাঁর
কোনো আপত্তি আমলে নেবে না সেটিও টের পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে
ছিটমহল চুক্তি বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে মোদি সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি চেয়ার স্থাপনে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব
পাঠিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ওই
প্রস্তাব অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে। জানুয়ারি মাসে
ওই চেয়ার স্থাপন অনুষ্ঠান করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে উপস্থিত
থাকতে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণও জানাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সুরঞ্জন দাশ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ঐতিহাসিক চেয়ার স্থাপনের জন্য রাজ্য
সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত বুধবার সন্ধ্যা
পর্যন্ত আমাদের জানানো হয়নি।’ এটি বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের বিশেষ করে দুই
বাংলার সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলে মনে করেন ড. সুরঞ্জন দাশ।
ভারতীয় মিডিয়ায় গুঞ্জন রয়েছে, তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতা সরকার ইতিবাচক না হলেও বিজেপি সরকার এ চুক্তি করবেই। কারণ বাংলাদেশের স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ থাকলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত ভারত যে নিশ্চিত হবে সেটি কংগ্রেসের মতো বর্তমান বিজেপি সরকারও বুঝে গেছে। সে কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাইছে দিল্লি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটতে রাজি মোদি সরকার।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর ৩৯তম শাহাদাত
বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অতি সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের
দ্বারভাঙ্গা হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সুরঞ্জন
দাস বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি চেয়ার প্রফেসর পদ চালু করার
প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান , বাংলাদেশ সরকার এবং কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে আর্থিক অনুদান দিয়ে পদটি চালু করবে। অনুষ্ঠানে
উপস্থিত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম এই ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
ভিসি এই চেয়ার তৈরি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন যে, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ
এশিয়ার বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে গবেষণা ও পঠন-পাঠনই এই চেয়ার চালু করার প্রধান
উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ স্টাডিজ সেন্টার তৈরি করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান
তিনি।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment