জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছরের সেশনজটের কারণে বন্দী ১৯ লাখ শিক্ষার্থী !!!!! - SongbadProtidin24Online.com

সর্বশেষ সংবাদ

SongbadProtidin24Online.com

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday, January 30, 2015

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছরের সেশনজটের কারণে বন্দী ১৯ লাখ শিক্ষার্থী !!!!!


দেশের প্রায় ১৯ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার বিচারে দেশের সর্ববৃহত্ বিদ্যায়তন এটি। ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী গড়ে দেড় থেকে দুই বছরের সেশনজটে আটকে রয়েছে। দীর্ঘায়িত হচ্ছে তাদের শিক্ষাজীবন। ফলে কর্মজীবনে প্রবেশে বিলম্বের পাশাপাশি সামাজিকভাবেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেশনজট পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছে। ঐ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সর্বোচ্চ এক বছর আট মাস এবং সর্বনিম্ন ১১ মাস ৫ দিনের সেশন জট রয়েছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনার্স শেষ হওয়ার কথা ছিল গত এপ্রিল মাসে। কিন্তু তাদের সমাপনী পরীক্ষা এ বছরের ডিসেম্বরের আগে গ্রহণ করতে পারবে না কর্তৃপক্ষ। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরতদের অনার্স সমাপনী পরীক্ষা হওয়ার কথা এ বছরের এপ্রিলে। কিন্তু ক্লাস গ্রহণশেষে এটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের অক্টোবরে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষের (পুরাতন) শিক্ষার্থীদের অনার্স সমাপনী পরীক্ষা হওয়ার কথা ২০১৬ সালের এপ্রিলে। কিন্তু এ বর্ষের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত সমাপনী পরীক্ষা হবে ২০১৭ সালের মে মাসে। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষের (নতুন) শিক্ষার্থীদের অনার্স সমাপনী পরীক্ষার সিটে বসার কথা ২০১৭ সালের এপ্রিলে। এ শিক্ষার্থীরা চতুর্থ বর্ষের অনার্স সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে ২০১৮ সালের জুনে। অর্থাত্ এ চারটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে এক বছর আট মাস, এক বছর ৬ মাস, এক বছর এক মাস এবং এক বছর দুই মাসের সেশনজটে বন্দি রয়েছে। এছাড়া তিন বছর মেয়াদী স্নাতক পাস কোর্সের ২০১০-১১, ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরাও প্রায় এক বছরের সেশনজটে আটকে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সূত্র জানায়, সেশনজট পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মূল্যায়নে ভর্তি প্রক্রিয়া এবং এ প্রক্রিয়াশেষে ক্লাস  শুরুর পূর্ববর্তী সময়কে গণ্য করা হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ ও ক্লাস শুরুর এ সময়সীমা ছয় থেকে আট মাস। অর্থাত্ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছর মেয়াদী স্নাতক সম্মান বা অনার্স শেষ করতে অন্তত ছয় বছর এবং তিন বছর মেয়াদী সম্মান পাস কোর্স শেষ করতে পাঁচ বছর সময় লাগে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট নিয়ে সম্প্রতি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে  ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় পৌঁছেছে’।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, এ সেশনজটের কারণে দেশের উচ্চ শিক্ষায় ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতিতে বৈষম্য এবং ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। সমস্যা নিরসনে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে বিপুল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।
২০১৮ সালের আগেই সেশনজট মুক্ত করা হবে : ভিসি

এ প্রসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, সেশনজট কিছুতেই কাম্য নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট একদিনে সৃষ্টি হয়নি। দিনে দিনে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাদেশ জুড়ে বিস্তৃত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এবং আয়তন বিবেচনায় পরিস্থিতিকে এখনই ভয়াবহ বলা যাবে না।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটের সবচেয়ে বড় কারণ এর আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোকে শক্তিশালী না করা এবং পরীক্ষা ও ক্লাস গ্রহণের বিষয়ে যথাযথ নীতিমালার অনুপস্থিতি। সেশনজট পরিস্থিতি নিরসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রতি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোকে শক্তিশালী করা হয়েছে। জরুরি কর্মসূচি বা ক্রাশ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০১৮ সালের আগেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট মুক্ত করা হবে।

সমস্যা ও বিকল্প উপায়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জটের জন্য বিশেষজ্ঞরা ছয়টি সমস্যাকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো-ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে বিলম্ব, ক্লাস শুরু করতে বিলম্ব, শ্রেণীকক্ষ স্বল্পতা, শিক্ষক স্বল্পতা, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে সময়ক্ষেপণ এবং প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতা। তাই এ সমস্যাগুলো নিরসনে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভর্তি পরীক্ষা, ক্লাস গ্রহণ, পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছেন তারা। এ লক্ষ্যে নতুন পরীক্ষা পরিচালন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি, ডাকযোগাযোগের স্থলে বিকেন্দ্রীকৃত ব্যবস্থা তথা আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহকে পুরোপুরি সক্রিয় করে এর মাধ্যমে সরাসরি পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ‘ওএমআর’ পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি হাজিরা, উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে পরীক্ষকগণ কর্তৃক একই পদ্ধতিতে নম্বর প্রেরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সময় সাপেক্ষ ও ম্যানুয়াল হওয়ার স্থলে একটি বিশেষ সফটওয়ার তৈরি করা হয়েছে। পরীক্ষকগণ উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে এ ডিভাইসের সাহায্যে প্রদত্ত নম্বর গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারে পাঠাবেন। ফলে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশে দীর্ঘ বিলম্ব বন্ধ হবে। আবার শ্রেণীকক্ষ স্বল্পতা এবং অপ্রতুল পরীক্ষাকেন্দ্রজনিত সমস্যা আপাত মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত কলেজগুলোতে সকালে ক্লাস এবং বিকালে পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করে নতুন একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করা হয়েছে। অর্থাত্ কলেজগুলোতে এখন থেকে সকালে পরীক্ষা এবং বিকালে ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে না। এরই অংশ হিসেবে ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই প্রতি বছরের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অগ্রিম জানিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন একাডেমিক ক্যালেন্ডার শিগগিরই সকল কলেজে প্রেরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
আঞ্চলিক কেন্দ্র শক্তিশালীকরণ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের জন্য কেন্দ্রীভূত প্রশাসন ব্যবস্থা ও এর কারণে সৃষ্ট ধীরগতিকে দায়ী করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ সমস্যা দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি আঞ্চলিক কেন্দ্রকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রশাসনিক ও পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে সেশনজট দূর হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার গুণগত মানও বৃদ্ধি পাবে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি জানান, ৬টি প্রশাসনিক বিভাগীয় শহরে (বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম) জমি কিনে স্থায়ী আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপন ও উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এর ফল পেতে শুরু করবেন।


সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here