বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে দুটি কালো অধ্যায়ের একটি রানা প্লাজা ধস। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিলের এই ঘটনায় অন্তত ১ হাজার ১১৭ জন পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ভয়াবহ এ ঘটনার পর দায়ের হওয়া দুটি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের জন্য আদালত বারবার দিন ধার্য করলেও চার্জশিট দাখিল করছেন না মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
রোববারও ওই ঘটনার মামলার চার্জশিট দাখিলের জন্য দিন ধার্য থাকলেও চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চার্জশিট দাখিলের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ মার্চ।
এরআগে গত ৬ নভেম্বরও চার্জশিট দাখিলের ধার্যদিনে তা দাখিল করেননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
সর্বশেষ গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দাখিল করা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তাসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করার কাজ করছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহাকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) বিজয় কৃষ্ণ কর।
ওই প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, এই মামলায় ৯৫২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। ২২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৪২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের জন্য সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি হিসেবে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
১৩ জন সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়ার অনুমতি পাওয়া গেলেও অবশিষ্ট ৭ জনের বিষয়ে এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।
সেই কালো দিন
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল। হঠাৎই ধসে পড়ে সাভারের রানা। ব্যাপক উদ্ধার অভিযানে ধ্বংসস্তুপ থেকে ১ হাজার ১১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ২ হাজার ৪৩৮ জনকে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো ১৯ জন মারা যান। মৃতদের ৮৪৪ জনের লাশ স্বসোহেল রানাজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা রেখে ২৯১ জনের অসনাক্তকৃত লাশ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১ হাজার পাঁচশ ২৪ জন আহত ছিলেন।
তদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন ৭৮ জন।
এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ২১ জনের মধ্যে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বাবা আবদুল খালেক ওরফে খালেক কুলুসহ ৮ জন জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন। জামিনে মুক্ত হওয়া অপর ৭ আসামি হলেন- সাভার পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র ও সাভার পৌর বিএনপির সভাপতি রেফাতউল্লাহ, সোহেল রানাকে যশোরে আত্মগোপনে থাকতে সহায়তাকারী অনিল দাস, শাহ আলম ও আবুল হাসান, রানা প্লাজার অনুমোদন ও নির্মাণ-প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্বে থাকা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এমতেমাম হোসেন, রানা প্লাজার নকশা অনুমোদনের জন্য সুপারিশকারী সাভার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ও পৌরসভা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খান ও সাভার পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।


No comments:
Post a Comment