১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করে প্রতি মাসে সৌদি আরবে ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি।
সোমবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সৌদি আরবের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান তিনি।
সৌদির শ্রম ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপমন্ত্রী ড. আহমেদ আল ফাহাইদ দেশটির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা সৌদিতে গিয়ে প্রতি মাসে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ রিয়াল বেতন পাবেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার টাকা।
তবে এর আগের ভারত তাদের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৫শ’ রিয়াল দাবি করলে বিষয়টি নাকচ করে দেয় সৌদি সরকার।
ড্রাইভার, গৃহকর্মীসহ ১০ টি ক্যাটাগরিতে প্রতি মাসে ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে কাজের সুযোগ পাবেন বলে জানান প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী।
তবে সৌদির শ্রম ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপমন্ত্রী বেতনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, কর্মীর ভিসা, যাতায়াত ও যাবতীয় খরচ নিয়োগকর্তা দেবে। শুধু পাসপোর্ট তৈরিসহ গ্রাম থেকে শহরে যাতায়াত বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কর্মীর খরচ হতে পারে।
খোন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, মালয়েশিয়ায় জি টু জি (সরকার থেকে সরকার) প্রক্রিয়ায় শ্রমিক পাঠানো হলেও সৌদি আরবের ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই শ্রমিক পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে এজেন্সিগুলো কতো টাকা করে সার্ভিস ফি নেবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেবে না সরকার।
তবে শ্রমিকের কাছ থেকে যাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করা হয় সেটি নজরদারি করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
সৌদি আরবের শ্রম ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপমন্ত্রী ড. আহমেদ আল ফাহাইদ সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে প্রায় ১৩ লাখ শ্রমিক গেছেন। এবারও ব্যাপক হারে শ্রমিকের চাহিদা আছে। বাংলাদেশিদের সেখানে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে বলেও জানান আহমেদ আল ফাহাইদ।
সকালে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসে সৌদি প্রতিনিধি দল। প্রবাসীকল্যাণ সচিব খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী জানান, প্রতি মাসে ১০ হাজার শ্রমিক নেওয়ার কথা জানিয়েছে সৌদি প্রতিনিধি দল। দু’দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমিটির মাধ্যমে কিভাবে শ্রমিক যাবে, কি কি সুবিধা দেওয়া হবে সেটি সমন্বয় করা হবে।
দু’দেশের প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে সৌদিগামী শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
এর আগে দীর্ঘ ৭ বছর বন্ধ থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে সৌদি সরকার।
এদিকে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চার দিনব্যাপী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় সৌদি আরবে যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের (পুরুষ ও নারী) নাম নিবন্ধনের জন্য স্টল নিয়েছে জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। মেলা চলবে সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে বৃহস্পতিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত।
মেলায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ৬০ নম্বর প্যাভিলিয়নে দুইশ’ টাকায় নাম নিবন্ধন করা যাবে। একই সঙ্গে রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ভবন এবং দেশের সব জেলার কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলবে।
দীর্ঘ সাত বছর পরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এ দেশটিতে শ্রমিক পাঠাতে আর কোনো বাধা থাকছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সৌদিতে শ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতেই সোমবার ১৯ সদস্যের সৌদি প্রতিনিধি দলটি বৈঠকে বসেন।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment