ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, এর সুফল মানুষ পেতে শুরু করেছে। ৪ দিন ব্যাপী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫ উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জনসেবা প্রদানে আমাদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আমাদের দেশের তরুণদের মেধার অভাব নেই। প্রয়োজন মেধা বিকাশে কার্যকর উদ্যোগ। এজন্য বর্তমান সরকার নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়নে বেসিসের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন,বেসিস আইটি শিল্পের জন্য ২৩ হাজার উপযুক্ত জনবল তৈরি করেছে। ২০১৮ সালের মধ্যে ১০ লাখ নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তৈরির কাজ করছে।
তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে রফতানির পরিমাণ চলতি বছর ২৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে এই খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তার সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, মানুষের জীবনের নানমুখী সুবিধা যুক্ত করাই হলো ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য। দুর্নীতি কমাতে সকল পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা প্রযুক্তি খাতে কোন দেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকবো না। বাংলাদেশ পোশাক খাতের চেয়ে বেশি আয় করবে প্রযুক্তি খাতে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, অল্পদিনের মধ্যেই বাংলাদেশে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ডাটা সেন্টার স্থাপিত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের সকল তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়াও ভাড়া দিয়ে বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এতোদিন শ্রম নির্ভর অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে ছিলো। এখন আমরা মেধা নির্ভর অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। একসময় বিদেশগামীরা মধ্যসত্বভোগীদের মাধ্যমে প্রতারিত হতেন। এখন অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে বিদেশ যেতে পারছেন। কোনো অনিয়মের অভিযোগ নেই। আর এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ে এবং আর্থিক লেনদেনে ¯^”QZv আনতে হলে সফটওয়্যার-নির্ভর ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই। তাই, ধাপে ধাপে সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে সফটওয়্যার-নির্ভর আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে বাসত্মবায়ন করা প্রয়োজন। যার ফলে একদিকে রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং অন্যদিকে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর জন্য বাজার সৃষ্টি হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, প্রযুক্তি খাতে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। সেই লক্ষ্যে এবার মেলায় বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী ও সরকারের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে মত বিনিময়ের এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে আমাদের ব্যবসায়ীরা। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার সহজতর হবে।
বিকাল সাড়ে ৫টায় সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয় তথ্যপ্রযুক্তির এ মিলনমেলা।
আয়োজনে প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে বেসিস সফট এক্সপো, ই-গভর্নেন্স এক্সপো, মোবাইল ইনোভেশন এক্সপো এবং ই-কমার্স এক্সপো। পাশপাশি ই-কমার্স জোন, বিপিও ফোরাম, ডেভেলপারস ফোরাম, আইটি ক্যারিয়ার কনফারেন্স এবং আউটসোর্সিং ফোরামের মতো নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগের পসরা নিয়ে হাজির থাকছে তরুন প্রযুক্তিবিদরা।
এসব প্রদর্শনী ছাড়াও সম্মেলন থাকছে প্রায় ২০টি সেমিনার, ১১টি কনফারেন্স এবং ১৩টি টেকনিক্যাল সেশন, সিএক্সও নাইট এবং ক্লাউড ক্যাম্প। সেমিনারের মধ্যে ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ১১টি, ই-গভর্নেন্স নিয়ে ১১টি এবং ৩টি স্পেশাল সেশন রয়েছে।
এ আয়োজনে ২৫টিরও বেশি দেশ থেকে যোগ দিচ্ছেন ৮৫ জন আইটি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা। তথ্যপ্রযুক্তির নিয়ে আয়োজিত সেমিনার ও টেকনিক্যাল সেশনে অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন তারা।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment