রাজধানীর রূপনগর যখন মাদকনগর !!!!! - SongbadProtidin24Online.com

songbad+cover

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

demo-image

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Wednesday, November 25, 2015

রাজধানীর রূপনগর যখন মাদকনগর !!!!!

Responsive Ads Here

rupnogor
রাজধানীর উত্তরের সর্বশেষ থানা রূপনগর। ইট-পাথরে ঘেরা শহুরে জীবন থেকে একটু ভিন্ন এই এলাকা। সবুজ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই হয়তো কেউ এই এলাকার নাম দিয়েছিলেন রূপনগর। মূল রাজধানীর বাইরে হওয়ায় কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে রূপনগর পর্যুদস্ত আজ মাদকের ভয়াল থাবায়। এখন সবাই একে মাদকনগর নামেই চেনেন!

বোটানিকাল গার্ডেন ও বেড়িবাঁধ এলাকা রূপনগরের ভেতরেই। বেড়িবাঁধের দু’পাশে ধানচাষের চিত্র দেখে মনে হয় এটি গ্রামীণ জনপদ। কিন্তু না, রাজধানীর ৪৯ থানার এটিও একটি। রূপনগর নামের যে জৌলুশ শুধুমাত্র মাদকের কারণে তা হারিয়ে গেছে। 

সরেজমিনে রূপনগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোনো প্রকার রাখঢাক ছাড়াই এখানে প্রকাশ্যে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, থানা-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের নজর এড়িয়ে চলছে এসব কায়কারবার। আবার এ এলাকায় তাদের পদধূলি পড়লেও তা শুধুমাত্র ভাগের টাকার জন্য! এমনটাই মনে করেন এখানকার লোকজন।  

যেসব স্থানে প্রকাশ্যে মাদক
মিরপুর ১০ গোল চত্বরের একটু সামনেই মিরপুর ১১  বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে হাতের বামে পশ্চিম প্রান্তে পায়ে হাঁটার পথেই চলন্তিকা বস্তি। আর এ বস্তিই রূপনগরের সবচেয়ে বড় মাদকের জোন হিসেবে সর্বজনখ্যাত। এখানকার মাদকের গডফাদার রহিম। মূলত তার নেতৃত্বেই বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ীরা। রহিমের প্রধান সহযোগী নজু। 

চলন্তিকা বস্তিতে প্রায় এক হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। যার প্রায় অধিকাংশতেই কোনো না কোনো মাদক ব্যবসা চলে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও মাদকসেবীরা এখানে আসে। নিরাপদ ভেবে এই এলাকা পছন্দও তাদের। এখানে তারা মাদক সেবন করে, এখান থেকে নিয়েও যায়। 

চলন্তিকা বস্তি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম কোণে বর্ধিত পল্লবীর পাশেই দুয়ারিপাড়া। দুয়ারিপাড়ায় ঢুকতে কোনো লোকের নিকট মাদক বিষয়ে কথা বললেই তাদের নাম মুখস্থ। সঙ্গে সঙ্গে তারা সালেহার নাম বলে। এই সালেহাই পুরো এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকের কাছে তিনি ‘ভাবি’ নামেও পরিচিত।

এখানে প্রকাশ্যেই মাদকগ্রহণ করতে দেখা যায়। এ ছাড়াও রূপনগর আবাসিক এলাকার ৮ নম্বর রোডে ‘বাবুর বউ’ স্পটও ব্যাপক পরিচিত। শিয়ালবাড়ি মোড়ে ববির স্পট, রজনীগন্ধা মার্কেটের পেছনের বস্তি জনির স্পট। 

পুরো রূপনগর এলাকা যেন ঘিরে রেখেছে মাদকে। এই এলাকায় মাদকের মধ্যে বেশি চলে ইয়াবা। হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজা, প্যাথেডিন, বিদেশি মদ, বিয়ারসহ এমন কোনো মাদক নেই যা পাওয়া যায় না। 

স্থানীয়রা যা বললেন
রূপনগরের স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ‘একসময় নামের কারণে রূপনগর মানুষের নিকট পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন আগের সেই রূপনগর নেই। যুবক, তরুণ, কিশোর থেকে শুরু করে মাদকের ভয়াল থাবায় অধিকাংশই আসক্ত।’ 

তিনি বলেন, ‘সামাজিকভাবে আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণে বারবার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। উল্টো তাদের হুমকিতে আমরাই শঙ্কিত থাকি।’ 

একই ধরনের মন্তব্য দেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ সকল মাদক ব্যবসায়ীদের পেছনে যেমন রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে, তেমনি রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তারা সবাইকে ম্যানেজ করে ব্যবসা করার কারণে আমরা কিছু করতে পারি না।’

এলাকার সমাজসেবক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘একাধিকবার মাদক প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেও কোনো কাজ হয়নি। মাদক ব্যবসায়ীরা এতটাই ধূর্ত এরা কাউকে পরোয়া করে না। থানা-পুলিশ থেকে শুরু করে সবাইকে ম্যানেজ করে এরা চলে। এদের নিকট আমরা অসহায়।’ তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে মাদক নির্মূল অভিযান চালানোর অনুরোধও করেন।

কর্তৃপক্ষ যা বললেন
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার রকিব রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় আমাদের লোক কাজ করছে। আমি এবার আরো কঠোর ভূমিকা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। ওই এলাকায় মাদক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে, গ্রেপ্তারও হচ্ছে।’

মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুলিশের কোনো সখ্যতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ এলাকার মাদক নির্মূলে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মাদকের গডফাদার রহিমকে আমরা গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছি।’

সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad