বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হচ্ছেন না।
বুধবার খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লা মিয়া এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন ‘দীর্ঘদিন তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে ছিলেন। পুরো চিকিৎসা শেষ না করেই দেশের জনগণের স্বার্থে তিনি ফিরে এসেছেন। তিনি এখনো শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তাকে আরো কয়েকদিন বিশ্রামে থাকতে হবে। এজন্য আগামীকাল তিনি আদালতে হাজির হতে পারছেন না। তবে এর পরবর্তী তারিখগুলোতে তিনি আদালতে হাজির থাকবেন।’
উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে ৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২৬ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ওই আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ।
ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় জেরা শুরু হওয়ার আগে খালেদা জিয়া চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকায় তার অনুপস্থিতির জন্য সময় আবেদন করা হয়।
ওইদিন জবানবন্দি প্রদানকারী জব্দ তালিকার সাক্ষীরা হলেন, ডাচবাংলা ব্যাংক মাতুয়াইল শাখার এ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুজ্জামান, দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োজিত পুলিশ কনস্টেবল মঞ্জুরুল হক এবং সিরাজউদ্দিন।
এ নিয়ে মামলাটিতে ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হলো। এদের মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে এবং ৬ জনের জেরা বাকি আছে।
অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ মামলায় হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল বিচারাধীন থাকায় এবং জিয়া চ্যারিটেল ট্রাস্ট মামলায় সিনিয়র আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে সময়ের আবেদন করেন। আদালত খালেদার অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষীর জবানবন্দি শুরুর আদেশ দেন।
এরপর সাক্ষীর জবানবন্দিকালে সাক্ষী দেখে দেখে বলার অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ১০ মিনিটের জন্য আদালত বর্জন করে পরে আবার ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ওই আদালতের তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় দুই মামলায় খালেদা ও তারেক রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর থেকেই এ বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসছিল খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ওই অনাস্থার মধ্যেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন তিনি। এরপরই গত ১৮ ডিসেম্বর তাকে বদলি করে আবু আহমেদ জমাদারকে নিয়োগ দেয়া হয়।
এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।
আসামি তারেক রহমান সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে আছেন। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু হতেই পলাতক।
অন্যদিকে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এ মামলায় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।
মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment