২০২১ সালের মধ্যে সবার (দেশের সকল নাগরিক) হাতে মোবাইল ফোন ও ২০২৫ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ জনগণকে ইন্টারনেট সেবার আওতার আনার লক্ষ্য রেখে ‘জাতীয় টেলিযোগাযোগ নীতিমালা, ২০১৬’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
জাতীয় সংসদ ভবনে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক নিয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
১৯৯৮ সালের জাতীয় টেলিযোগাযোগ নীতিমালার স্থলে নতুন নীতিমালাটি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জাতীয় টেলিযোগাযোগ নীতিমালা-১৯৯৮, জাতীয় আইসিটি নীতিমালা-২০১৫, জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা-২০০৯, আন্তর্জাতিক দূরপাল্লার টেলিযোগাযোগ সেবা নীতিমালা-২০১০- এ সবগুলোকে সমন্বিত করে একটি নীতিমালা বানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ নীতিমালাতে মূলত জাতীয় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও নতুন বৈশ্বিক জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার উদ্দেশ্যে ১০ বছরের জন্য প্রাথমিকভাবে এ নীতিমালাটি করা হয়েছে।’
নীতিমালার লক্ষ্যগুলো তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘স্বল্প মেয়াদি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যে মোবাইলের টেলিঘনত্ব ৮০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীত করা। ইন্টারনেটের বিস্তার ৩৪ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশে উন্নীতকরণ। ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের বিস্তার বর্তমানে ৭ শতাংশ রয়েছে, এটা ২০১৮ সালের মধ্যে ২০ শতাংশে উন্নীতকরণ।’
স্বল্প মেয়াদি অন্যান্য পরিকল্পনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সকল জেলা, উপজেলা সদর ও ২০০ ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ বিস্তৃতকরণ, সকল উপজেলা সদরে উচ্চগতির তারহীন ব্রডব্যান্ড সেবার প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, দেশে ডিজিটাল সম্প্রচার চালুকরণের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়।’
মধ্য মেয়াদি বা ২০২১ সালের মধ্যে ছয়টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘১০০ শতাংশ টেলিঘনত্ব অর্জন অর্থাৎ সকল নাগরিকের হাতে টেলিফোন থাকবে। ইন্টারনেটের বিস্তার ৬৫ শতাংশে উন্নীতকরণ, ব্রডব্যান্ডের বিস্তার ৪০ শতাংশে উন্নীতকরণ, সকল ইউনিয়নকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে তথ্যের মহাসড়কে যুক্তকরণ, সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে উচ্চগতির তারবিহীন ব্রডব্যান্ড সেবা বিস্তৃতকরণের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায় এ ছাড়া রয়েছে দেশের ২০ শতাংশ বাসস্থান ও প্রতিষ্ঠানে উচ্চগতির অপটিক্যাল ক্যাবল ফাইবার নেটওয়ার্কে প্রবেশযোগ্যতা নিশ্চিতকরণ।’
নীতিমালার দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্যগুলো তুলে ধরে শফিউল আলম বলেন, ‘এ লক্ষ্যগুলো ২০২৫ সালের মধ্যে অর্জন করতে হবে। ইন্টারনেটের বিস্তার ৯০ শতাংশে উন্নীতকরণ, জনসংখ্যার ৬০ ভাগ ব্রডব্যান্ড সেবা ভোগ করবে এমন পরিবেশ তৈরি করা, দেশের ৫০ শতাংশ বাসস্থান ও প্রতিষ্ঠানে উচ্চগতির অপটিক্যাল ক্যাবল ফাইবার নেটওয়ার্কে প্রবেশযোগ্যতা নিশ্চিত করা হবে।’
নীতিমালায় একটি সুপারিশ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘টেলিযোগাযোগ-সংক্রান্ত টেলিগ্রাফ আইন-১৮৮৫, তারহীন টেলিগ্রাফি আইন-১৯৩৩, বেতার সম্প্রচার আইন-১৯৭৫ ও ১৯৯২, টেলিভিশন সম্প্রচার আইন-১৯৬৫, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬, পর্নোগ্রাফি আইন-২০১২ ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০১ কে সমন্বয় করে একটি বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে একাধিক আইন করা হবে।’
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment