রাজনীতিতে তারা দু’জনই দুই মেরুতে। দু’জনই দু’টি বড় ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে। ছাত্র সংগঠন হলেও ছাত্র অধিকারের চেয়ে সর্বদা একে অপরের সমালোচনামুখর। এক কথায়- রাজনীতির মাঠে তারা একে অপরের প্রতিপক্ষ। শাসকদলের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বলে একটি দল বীরদর্পে অবস্থান করছে ক্যাম্পাসে। অন্যদল বিগত ১০ বছর ক্যাম্পাস ছাড়া। ক্লাস-পরীক্ষায়ও বাধা দেয়া হয় বলে অভিযোগ।
বলছি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসানের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকা পরিবেশ পরিষদের এক বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়ে দীর্ঘদিন পরে ক্যাম্পাসে আসেন ছাত্রদলের দুই নেতা। বৈঠক শেষে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতারা কিছু মুহূর্ত ছিল ভালো লাগার। যেগুলো বাংলার রাজনীতিতে সম্প্রীতি ও সৌহার্দের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সমালোচনাও হবে হয়ত কিন্তু আশা জাগা নিয়ে এ মুহূর্তগুলো দেশবাসী ছাত্র সমাজের জন্য ভালো লাগার।
সাংবাদিকদের ইচ্ছা হলেও দুই নেতা ব্রিফ করেছেন একসঙ্গে। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নিজ নিজ সংগঠনের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবি তুলেছেন একজন। দাবিতে একমত হয়েছেন অন্যজনও। তবে শর্ত দিলেন সঙ্গে পেট্রল বোমা থাকতে পারবে না। স্বস্তির বিষয় দুই নেতার এক সঙ্গে করা ব্রিফে উত্তেজনা ছিল না।
যখন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বেরোচ্ছেন তখন দেখা গেল বাইরে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। আর ছাত্রদলের মাত্র ওই দুজন। ছাত্রদলের ওই দুই নেতাকে তখন নিরাপদে বের করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী। ছাত্রদলের দুই নেতাকে ঘিরে ছাত্রলীগের নেতারা। ছাত্রদলের দুই নেতার মধ্যে ছিল আতঙ্ক। বারবার তারা পেছনের দিকে দেখছিলেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং বিশ্ববিদ্যালয়রে নেতারা ঘিরে রেখেই ছাত্রদলের দুই নেতাকে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের করে আনলেন।
এরপরই দুই নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে ওই দুই নেতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি অপেক্ষা করছিল। বিদায়বেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ছাত্রদল সভাপতিকে বিদায় জানিয়েছেন গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে। বিদায়বেলা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলিও করেছেন। এ যেন বেদাবেদ ভুলে গিয়ে সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এক হওয়া।
সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আশা করেন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতার এ সম্প্রীতি ছড়িয়ে পড়ুক সারা বাংলায়। ক্যাম্পাসে সহাবস্থান থাকুক সব ছাত্র সংগঠনের। তবে সেটি কতটুকু সম্ভব হবে প্রশ্ন থেকে যায়।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment