ভারতের মধ্য প্রদেশে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই বছর আগে নিখোঁজ এক ২২ বছর বয়সী তরুণী হত্যার অভিযোগে গত রোববার তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ বলছে, ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া অজয় দেবগন ও টাবুর অভিনীত বলিউডের সাসপেন্স থ্রিলার মুভি ‘দৃশ্যম’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এ হত্যাটি করেছে অভিযুক্ত ওই পাঁচ ব্যক্তি।
ইনডোর পুলিশের ডিআইজি হরিনারায়ণচারী মিশ্র সাংবাদিকদের বলেন, বিজেপি নেতা জগদীশ করোটিয়া ওরফে কালু পালওয়ান (৬৫) ও তার তিন ছেলে অজয় (৩৬), বিজয় (৩৮), বিনয় (৩১) এবং তাদের সহযোগী নিলীশ ক্যাশপকে (২৮) টুইঙ্কেল দাগরে নামের ওই তরুণী হত্যায় জড়িত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, টুইঙ্কেল দাগরে নামের ২২ বছর বয়সী ওই তরুণী ইনডোর জেলার বঙ্গাঙ্গা অঞ্চলের বাসিন্দা। ডিআইজি হরিনারায়ণচারী মিশ্র বলেন, বিজেপি নেতা জগদীশ কারোতিয়ার সঙ্গে টুইঙ্কেল দাগরে নামের ওই তরুণীর ‘অবৈধ’ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তার পরিবারে এ নিয়ে সমস্য তৈরি হয় যখন টুইঙ্কেল জগদীশের সঙ্গে ঘর-সংসার করার কথা বলেন।
ডিআইজি হরিনারায়ণচারী মিশ্র আরও বলেন, পরিবারে এমন সমস্যা তৈরি হওয়ার কারণে জগদীশ কারোতিয়া ও তার তিন সন্তান টুইঙ্কেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মাফিক ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর তাকে হত্যা করে জগদীশ, তার তিন ছেলে ও তাদের একজন সহযোগী। হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে টুইঙ্কেলের মরদেহের বদলে দৃশ্যম সিনেমার মতো একটি কুকুরকে ওই স্থানে পুতে রাখে তারা।
কিন্তু ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ তরুণিীকে হত্যার পর যেখানে মাটিচাপা দেয় সেখান থেকে অলঙ্কার ও ব্রেসলেট উদ্ধার করে। এসব পাওয়ার পর হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
ডিআইজি হরিনারায়ণচারী মিশ্র বলেন, ‘আমরা এই হত্যকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি হত্যার আগে ওই পাঁচ ব্যক্তি তরুণীকে হত্যার আগে দৃশ্যম সিনেমা দেখে। হত্যার ঘটনা চাপা দিয়ে তদন্তের মোড় অন্যদিকে ঘোরাতে সিনেমার মতো করে মরদেহের বদলে একটি কুকুরকে কবর দেয় তারা। পুলিশ ওই গর্ত খুড়ে একটি কুকুরের পচা মরদেহ পায়।’
২০১৫ সালে বলিউডে মুক্তি পাওয়া সিনেমার গল্পটাও ঠিক একই রকম। অজয় দেবগন ও টাবু অভিনীত সেই সাসপেন্স থ্রিলার সিনেমাতেও এমন একটি খুনের ঘটনা ঘটে। অজয় দেবগনের মেয়ের একটি ‘অশ্লীল’ ভিডিও করে তার মাধ্যমে মেয়েটির পরিবারকে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করে সমীর দেশমুখ নামের এক যুবক। পরে মা মেয়ের সঙ্গে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে মৃত্য হয় ওই যুবকের।
কিন্তু বিপত্তি বাধে অন্য জায়গায়। কেননা গোয়া পুলিশের আইজির ভূমিকায় অভিনয় করা টাবুর ছেলে হল সমীর দেশমুখ। এদিকে অজয় দেবগন বাড়িতে এসে খুনের ব্যাপারটা দেখার পর মেয়ে তার পরিবারকে বাঁচাতে মরদেহ কবর দেয়। কিন্তু অনেক তদন্তের পর পুলিশ ওই জায়গা খুড়ে দেখতে পায় সেখানে একটি কুকুরকে কবর দেয়া হয়েছে। বেঁচে যায় অজয় ও তার পরিবার।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment