মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল পুরোপুরি চালু হওয়ার পর জুন থেকে শ্যালা নদীতে নৌ-যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।
মঙ্গলবার (১২ জুন) সচিবালয়ে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে নৌ-যান চলাচল বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।
গত ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনে শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবিতে পরিবেশ ও প্রাণিকূলের ব্যাপক ক্ষতির পর মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল দ্রুত চালুর দাবি উঠে।
সংবাদ সম্মেলনে নৌমন্ত্রী জানান, গত দেড় দশক ধরে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে নৌ-পথের নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ৮৭ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল করতো।
গত বছরের ১ জুলাই মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে নৌপথ খনন শুরুর পর এ পর্যন্ত ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। খননকৃত নৌপথে ভাটার সময় ১২০/১৫০ ফুট প্রশস্ত ও ৮/১০ ফুট গভীর পানি থাকে। গত ৬ মে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে নৌপথ খুলে দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ২৭৬টি নৌযান চলাচল করেছে।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী খননের উপর জোর দেন জানিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ে ৫৩টি রুটের খনন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলসহ ২৪টি নৌপথ খননের বরাদ্দ দেওয়া হয়।
মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ৩১ কিলোমিটারের মধ্যে ২২ কিলোমিটার খনন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৩৩০ ফুট প্রশস্ত ও ১৩ দশমিক ১২ ফুট গভীরতায় এক কোটি ঘনমিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪৭ দশমিক ১৭ লাখ ঘনমিটারের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র ১২টি ড্রেজার ও ৩টি লং বুম এক্সকাভেটর দিয়ে প্রায় ৩২ দশমিক ৮১ লাখ ঘনমিটার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (চায়না হারবার কোম্পানি ও বসুন্ধরা) ৫টি ড্রেজার ও এক্সকাভেটর দিয়ে ১৪ দশমিক ৩৬ লাখ ঘনমিটার খনন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগামী জুনে পুরোদ্যমে মংলা-ঘষিয়খালী চ্যানেল চালুর পর শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ হবে বলে আশা করছি।
মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ সালে রামপাল এলাকায় যথাক্রমে ১.২১ লাখ ঘনমিটার ও ১.১৫ লাখ ঘনমিটার খনন করা হলেও নদীর উভয় দিকের স্রোত একস্থানে মিলিত হওয়ায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পলি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভরাট হয়ে যাওয়ায় ওই সময়ে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল নৌ-পথের খনন বন্ধ করা হয়।
মংলা-ঘষিয়খালী চ্যানেল ক্যাপিটাল খননের পর মেইনটেন্যান্স খনন চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান শাজাহান খান।
ওই চ্যানেলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ৩২টি খাল ও শাখা খালের বাঁধ মুখগুলো খনন করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোনো প্রভাবশালীদের কারণে খননকাজ বন্ধ হবে না। কোনো বাঁধা এলো উত্তোরণ করব।
ঢাকার চারপশের নৌপথ ঠিক রাখতে সামাজিক আন্দোলন আবারও জোরদার করা হবে বলে আরেক প্রশ্নের জবাবে জানান নৌমন্ত্রী।
নৌসচিব শফিক আলম মেহেদী, বিআইডব্লিউটিএ’র প্রদান প্রকৌশলী আব্দুল মতিনসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment