মাদারীপুরে মৌমাছির স্কুল - SongbadProtidin24Online.com

সর্বশেষ সংবাদ

SongbadProtidin24Online.com

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Thursday, February 20, 2020

মাদারীপুরে মৌমাছির স্কুল

মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের চরকালিকাপুর তাল্লুক গ্রামের ১৬ নম্বর চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মৌমাছির দখলে। বিদ্যালয়ের প্রায় ৭০টি মৌমাছির চাকে কয়েক হাজার মৌমাছি বাস করছে। দ্বিতলা বিদ্যালয় ভবনের চারিদিক ঘিরে আছে মৌমাছির বাসাগুলো।
বিদ্যালয়, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের চরকালিকাপুর তাল্লুক গ্রামে ১৯৪৫ সালে ১৬ নম্বর চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভবনটি নির্মিত হয় ২০০২ সালে। নতুন এ ভবনটি নির্মিত হবার ৭/৮ বছর পর থেকে শীতের শুরুতে মাঝে মধ্যে কিছু মৌমাছি বাসা তৈরি করত। ৫/৬ মাস থাকার পর অন্যত্র চলে যেত। গত ৫ বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে মৌমাছি বাসা বেঁধে পাকাপাকিভাবে আছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টির চারিদিকে প্রায় ৭০টি মৌচাক রয়েছে। 
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা কিছু সময়ের জন্য হলেও বিদ্যালয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে মৌচাকগুলো দেখে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা এসে মৌচাকগুলো দেখে যায়। যদি কোনো মানুষ মৌচাকে আঘাত করে তাহলে মানুষকে কামড় দেয়, আঘাত না করলে কাউকে কোনো কামড় দেয় না। বিদ্যালয়ের ছোট-বড় শিক্ষার্থীরাও আনন্দের সাথে মৌচাকের সামনে দিয়ে যাওয়া-আসার মাধ্যমে ক্লাস করে। নির্ভয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। 
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সুমন হাসান বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের চারদিকের দেয়ালে প্রচুর মৌমাছি বাসা বেঁধেছে। মৌমাছির বাসা বাঁধার কারণে আমাদের লেখাপড়ায় কোনো ক্ষতি হয় না। মৌমাছিগুলো খুব ভালো। আমাদের কোনো ছাত্র-ছাত্রীদের কামড়ও দেয় না। কেউ যদি মৌমাছিদের আঘাত করে তাহলে কামড় দেয়। 
পঞ্চম শ্রেণির আরেক ছাত্র তৌহিদ বলেন, বিদ্যালয়ের চারিদিকে মৌচাকগুলো দূর থেকে দেখলে ভয় লাগে। অথচ মৌমাছি আমাদের কাউকে কামড় দেয় না। মৌমাছিগুলো আমাদের বন্ধু হয়ে গেছে। আমরা যখন ক্লাসে বসে লেখাপড়া করি কিছু মৌমাছি ক্লাসের ভেতর দিয়ে ঘোরাঘুরি করে। দেখলে মনে হবে মৌমাছিগুলো আমাদের সাথে পড়াশোনা করছে।
পঞ্চম শ্রেণির আরেক ছাত্রী মিম জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ের মৌমাছিগুলো খুব ভালো। অনেকগুলো মৌমাছির বাসার মধ্যে দিয়ে আমরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করি। বিদ্যালয়ের বারান্দা দিয়ে ও মাঠ দিয়ে আমরা যখন খেলাধুলা করি তখন আমাদের শরীরের সাথে মৌমাছি লাগলেও কামড় দেয় না। অথচ গ্রামের অন্য কোনো জায়গার মৌমাছি সামান্য আঘাত পেলেই মানুষকে কামড় দেয়। এ মৌমাছিগুলো আমাদের কোনো ক্ষতি করে না। এত মৌমাছি থাকার পরে আমরা আনন্দে পড়ালেখা করছি। মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হলে মাঝে মধ্যে আমরা মধু খেয়ে থাকি। 
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চায়না আক্তার বলেন, দুই বছর হলো আমি এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। আমি আসার পর থেকেই দেখি বিদ্যালয়ের চারপাশের দেয়ালে প্রচুর মৌচাক। প্রথমে ভয় লাগতো এত মৌমাছির মধ্যে কিভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করাব। এখন দেখি ভিন্ন চিত্র। মৌমাছিগুলো কোনো শিক্ষক বা ছাত্র-ছাত্রীদের কামড় দেয় না। যদি কেউ মৌচাকে আঘাত করে তা হলে কামড় দেয়। বিদ্যালয় চলাকালীন কেউ মৌমাছিকে আঘাত করে না। যার ফলে আমাদের কারো কোনো ক্ষতি করে না। মৌমাছি ওদের মতো থাকে আর আমরা আমাদের মতো করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করাই। 
চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোত্তাকিন আহমেদ সোহেল বলেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমাদের বিদ্যালয়ের দ্বিতলা ভবনটির চারপাশে প্রচুর মৌমাছি বাসা তৈরি করছে। এলাকায় অনেক কাঁচা-পাকা বাড়ি, গাছপালা রয়েছে, যেখানে তেমন কোনো মৌমাছির বাসা নেই। অথচ আমাদের বিদ্যালয়ের চারদিকে প্রচুর মৌচাক। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ মৌচাক দেখতে আসে।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here