সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের গণিত শিক্ষক রেজাউল করিম পাটি গণিতের ক্ষেত্রফলের ৪টি এবং ঘনজ্যামিতির ৮টি মোট ১২টি নতুন সূত্র উদ্ভাবন করেছেন।
এর মধ্যে আয়তক্ষেত্রের ২টি বর্গক্ষেত্রের ২টি করে সূত্র রয়েছে। ঘনজ্যামিতির ৮টি সূত্রের মধ্যে আয়তকার ঘনবস্তুর জন্য ২টি, ঘনকের জন্য ২ট, আয়তাকার ক্ষেত্রের জন্য ২টি এবং বর্গাকারক্ষেত্রের জন্য ২টি করে সূত্র রয়েছে।
এ সূত্রগুলি ব্যবহার করে ৭ম থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা খুব সহজে এবং কম সময়ে আয়তক্ষেত্র ও বর্গক্ষেত্রের জটিল ও কঠিন অংক এবং ঘনজ্যামিতির ঘনবস্তুর ও ঘনক্ষেত্রের সমাধান করছে। এতে তারা গণিত সৃজনশীল পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করছে। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিন দিন এ সূত্রগুলোর ব্যাপক জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিশেষ করে এ সূত্র ব্যবহারে দূর্বল শিক্ষার্থীরাও ভালো ফলাফল করছে। আবার তাদের সৃজনশীল ভীতিও দূর হয়ে গেছে। এতে অভিভাবকরাও অভিভূত বিস্মিত হয়ে পরেছে। বিশেষ করে দূর্বল শিক্ষর্থীরা ভালো ফল লাভ করায় তাদের অভিভাবকেরা খুশিতে আত্মহারা হয়ে পরেছেন। তারা উদ্ভাবক রেজাউল করিমককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উদ্ভাবক রেজাউল করিম জানান, দূর্বল শিক্ষার্থীদের বিষয় ও সৃজনশীল পরীক্ষার চিন্তা মাথায় নিয়ে এ সূত্র গুলো দীর্ঘ গবেষনার মাধ্যমে প্রমাণ ও ব্যাখ্যা সহ সহজ ও সরল ভাবে প্রয়োগের পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা চরম উপকৃত হচ্ছে।
শুধু তাই নয় শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে এবং প্রাইভেট পড়ার ঝামেলা এড়িয়ে ঘরে বসেই পাঠ গ্রহন করতে পারে সে জন্য ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছেন।
তিনি তার সূত্রের প্রয়োগ ব্যাখ্যা সমাধান সব কিছু ক্লাসের মত করে ভিডিও ধারণ করে বাজারে ছেড়েছেন। তার এই ভিডিও সিডি এখন কাহালু ও বগুড়ার বিভিন্ন লাইব্রেরীতে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া মেমোরী ও পেনড্রাইভে করে নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে এসব অংক ও জ্যামিতির সমাধান করছে। ল্যাপটপ, নোটবুক, ট্যাব, সিডি প্লেয়ার ও মোবাইল ফোনের সাহায্যে এ বিষয়ে পাঠ গ্রহণ করছে। ফলে তার এ ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা ছাত্র - ছাত্রীদের মধ্যে নতুন সাড়া জাগিয়েছে। এই ভিডিও চিত্র বার বার দেখে ঘরে বসেই এ বিষয়ে সমস্যা গুলি সমাধান করছে। ফলে অংক ও জ্যামিতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভীতি অতি সহজে দূর হয়ে যাচ্ছে।
রেজাউল করিম সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে জানান, শুধু স্কুল কলেজ নয়, তার এই সূত্র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজেও লাগছে। এই সূত্র ব্যবহার করে যে কোন রাস্তাঘাট, বাগান বাড়ি, ভূমি, সিভিল কন্সট্রাকশান, কাঠের কাজের হিসাব হাই ডিফেন্সিয়াল, সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ছাড়াই সহজে বের করা যাবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও এই সূত্র কাজে লাগবে।
উদ্ভাবক রেজাউল করিমের কর্মস্থল বগুড়া কাহালু উপজেলা ডাঃ আব্দুস সোবাহান উচ্চ বিদ্যালয় সহ বগুড়ার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার এ সূত্র ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সূত্র গুলো ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যপারে তিনি বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রণালয়, শিক্ষাবোর্ড ও পাঠ্যপুস্তক প্রনয়ন সংস্থা বরাবর আবেদন করেও কোন সারা পাচ্ছেন না। তাই তার উদ্ভাবিত সূত্র গুলো এখনো পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ সূত্র গুলো পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা হলে এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এ বিষয়ের বিশেষ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হলে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবে। এ জন্য তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাবোর্ড, বিজ্ঞানবোর্ড, পুস্তক প্রনয়ণ কমিটিসহ সর্বস্তরের সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সেই সাথে তিনি আরোও জানিয়েছেন এ সূত্র গুলোর গবেষনা লব্ধ প্রমাণ ও ব্যাখ্যা তার কাজে সংরক্ষিত আছে। এ ব্যাপারে যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি প্রস্তুত রয়েছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তার কোন পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ নিতে চাইলে তিনি তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সবাইকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment