নিজস্ব প্রতিবেদক, বরগুনা: এফবি খাদিজা নামের ট্রলারটিতে উঠেছিলেন দুই শতাধিক পীরভক্ত। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে বরগুনার পাথরঘাটার চলাভাঙ্গা পীরের ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তারা। পথে পায়রা নদীর মোহনার আশারচরের কাছে আসতেই তিন নদীর ঘূর্ণিস্রোতে প্রবলভাবে দুলতে শুরু করে ট্রলারটি।
এসময় ভক্তরা ভয়ে নড়াচড়া শুরু করে। এতে ভারসাম্য হারাতে থাকে ট্রলারটি। আরো প্রবলভাবে কয়েক মিনিট দুলতে দুলতে স্রোতের টানে পানির নিচে যেতে থাকে। এক সময় উল্টে গিয়ে ভেসে ওঠে।
শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বরগুনার তালতলী উপজেলার নলবুনিয়ার চরের কাছে এ দুর্ঘটন ঘটে। ঘটনার আকস্মিকতায় ভক্তরা ঝাঁপিয়ে পড়ে পানিতে। আশপাশ থেকে মাছ ধরা নৌকা ও লঞ্চ গিয়ে ডুবে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে।
দুই শতাধিক ভক্তের মধ্যে প্রায় সবাই তীরে জীবিত ফিরে আসেন। তবে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আর ৫ থেকে ৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। কোস্টগার্ডের সদস্যরা নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে।
উদ্ধার করা মৃতদেহের মধ্যে তালতলী উপজেলার বগী গ্রামের জয়নাল নামের একজনের লাশ শনাক্ত করেছে পুলিশ।
সাঁতরে ওঠা এক যাত্রী খাইরুল ইসলাম সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে জানান, ট্রলারটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হয়েছিল। পায়রা নদীর মোহনায় তালতলীর নলবুলিয়া এলাকায় আসায় পরে ভক্তরা নড়াচড়া করতে থাকে। এসময় হঠাৎ একদিকে কাত হয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।
স্থনীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ১০ টায় কুয়াকাটার আলীপুর থেকে প্রায় ১০০ যাত্রী নিয়ে রওনা দেয় এ ট্রলারটি। পরে বরগুনার তালতলী উপেজেলার সোনারচর থেকে আরো প্রায় ১০০ যাত্রী ওঠানো হয় ট্রলারটিতে।
বরগুনার তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবুল আক্তার সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে জানান, চলাভাঙা দরবার শরিফের মাহফিলে যোগ দেয়ার জন্য প্রায় ২ শতাধিক যাত্রী নিয়ে রওনা হয় ট্রলারটি।
অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় পায়রা নদীর মোহনায় নলবুনিয়ার চরের কাছে এসে ট্রলারটি ডুবে যায়। তবে বেশিরভাগ যাত্রী সাঁতরে উঠতে পারলেও এখনও ৬/৭ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে।
পাথরঘাটা কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. রাহাত সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে জানান, ডুবে যাওয়া ট্রলারটির নিখোঁজ ৭ যাত্রীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটি রশি দিয়ে বেঁধে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনটি টিম উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌছেছে বরগুনা জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment