মারা গেল খানজাহান আলীর (র.) এর শতবর্ষী কুমির "ধলাপাহাড়" !!!!! - SongbadProtidin24Online.com

সর্বশেষ সংবাদ

SongbadProtidin24Online.com

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Thursday, February 5, 2015

মারা গেল খানজাহান আলীর (র.) এর শতবর্ষী কুমির "ধলাপাহাড়" !!!!!



নিজস্ব প্রতিবেদক,বাগেরহাটঃ বাগেরহাটের ঐহিত্যবাহী হয়রত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘির শতবর্ষী কুমির ‘ধলা পাহাড়’ মারা গেছে।
 
বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিঘির উত্তর-পশ্চিম দিকে পাড়ের কাছে পানিতে কুমিরটির মৃতদেহ ভাসতে দেখে পাড়ের বাসিন্দারা।
 
মাজারের খাদেমদের মতে, কুমিরটির বয়স হয়েছিল প্রায় একশ’ বছর। মৃত কুমিরটি লম্বায় প্রায় ৯ ফুট।
 
জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের পক্ষ থেকে কুমিরটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
‘ধলা পাহাড়’ এর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে খান জাহান (র.) মাজারের দিঘিতে প্রায় সাত শত বছর ধরে প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকা মিঠা পানির কুমির যুগল ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ এর ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটলো। দিঘিতে এখন ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাংক থেকে ২০০৫ সালে আনা এই প্রজাতির দু’টি কুমির রয়েছে।
 
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে এলাকাবাসী ও মাজারের খাদেমদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোরে দিঘিতে পানি নিতে আসা লোকেরা মৃত কুমিরটিকে ভেসে থাকতে দেখেন। খাদেমরা খবর জানার পর স্থানীয় ষাটগম্বুজ ইউপি চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট সদর থানা পুলিশকে খবর দেন।

দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কুমিরটিকে পাড়ে তোলা হয়।
 
তাৎক্ষণিক ধলা পাহাড়ের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তবে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- দিঘিতে অবৈধভাবে মাছ শিকার করার জন্য পেতে রাখা ফাঁস জালে জড়িয়ে অথবা অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের কারণে শরীরে চর্বি জমে Pan steatites রোগে আক্রান্ত হয়ে কুমিরটির মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।
 
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুখেন্দু শেখর গাইন মৃত কুমিরটি পর্যবেক্ষণ করেসংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে  বলেন, জেলা প্রশাসন কুমিরটির মৃতদেহ ময়না তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব হবে।
 
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমির হোসাইন চৌধুরী সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে জানান, খান জাহানের (র:) দিঘির এ কুমির দেশে বিদেশে মানুষের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। এটি বিরল প্রজাতির মিঠা পানির কুমির। আমাদের দেশে উন্মুক্ত পরিবেশে সম্ভবত এটিই ছিল এই প্রজাতির সর্বশেষ কুমির। তাই আমরা কুমিরটির চামড়া সংরক্ষণের জন্য ষাটগম্বুজ যাদুঘরে হস্তান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি।
 
বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও যাদুঘরের কিউরেটর গোলাম ফেরদৌস সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমকে বলেন, ১৪০১ খ্রিস্টাব্দে এ অঞ্চলে হযরত খান জাহানের (র:) আগমন, খলিফতাবাদ নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও খান জাহান পরবর্তি ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে মাজারের দিঘির কুমিরযুগল ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ এবং তাদের পরবর্তী বংশানুক্রমের ইতিহাস একে অপরের সঙ্গে জড়িত। 

এ কুমির এখন বাগেরহাটের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। তাই জেলা প্রশাসন ও সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের সহযোগিতায় আমরা কুমিরের চামড়াটি যাদুঘরের দর্শনার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেই সঙ্গে আমরা এর কঙ্কালটিও সংরক্ষণের চেষ্টা করছি।
 
ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত খান জাহান (র.) সুলতানী শাসন আমলে ১৪ শতকের প্রথম দিকে বাগেরহাটে খলিফতাবাদ নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি ঠাকুর দিঘি নামে পরিচিত এ দিঘিটি সংস্কার করেন। তিনি এই দিঘিতে ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ নামে মিঠা পানির প্রজাতির এক জোড়া কুমির ছেড়ে দেন। তাদের নিয়মিত খাবার দিতেন, কুমির দুটি তার হাত থেকে খাবার খেতো।
 
খান-উল-আলম উলুঘ খান-ই-জাহানের মৃত্যুর পরও মাজারের খাদেম ও ভক্তরা এ কুমির দু'টিকে নিয়মিত খাবার দিতেন। ক্রমে এই কুমির যুগল বংশ বিস্তার করে এবং সাতশ’ বছর ধরে বংশানুক্রমে তারা এই দিঘিতে উন্মুক্ত পরিবেশে বসবাস করে আসছিল। এক সময়ে এই কুমির হযরত খান জাহানের ভক্ত অনুরাগীদের বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রতীকে পরিণত হয়। এরা হয়ে ওঠে এই মাজার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
 
মাজারের এ কুমির নিয়ে এলাকার মানুষের মুখে অনেক কিংবদন্তি ও লোককাহিনী শোনা যায়। এদিকে, সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকমের সঙ্গে আলাপ কালে মাজারের একাধিক খাদেম দাবি করেছেন, বংশ বিস্তারের জন্য ভারতের মাদ্রাজ থেকে কুমির এনে এখানে ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের কারণে মাজারের ঐতিহ্য আসল ‘কালা পাহাড়’ ‘ধলা পাহাড়’ কুমির ধ্বংস হয়েছে।
 
ইতোপূর্বে ১৯৮৪ সালের দিকে মাজার থেকে রাজশাহী চিড়িয়া খানাসহ দেশের বেশ কয়েকটি চিড়িয়াখানায় এ প্রজাতির কুমির নেওয়া হয়েছিল। এ সব স্থানের কোথাও ওইসব কুমির থাকলে তা এনে আবারো মাজারে ছেড়ে দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তারা।

 সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here