নিহত দুজন হলেন আবদুল জব্বার সিকদারের কান্দি গ্রামের যুবলীগ কর্মী আরশাদ মাতবর (৩৬) ও মুদি ব্যবসায়ী শাহজাহান দরানী (৪০)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, কুতুবপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আতিক মাতবর এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য ইব্রাহিম সিকদারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। দুজনই গত ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। ১০ দিন আগে ইব্রাহিমের সমর্থক ইদ্রিস হাওলাদার আতিকের দলে যোগ দেন। এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে ইদ্রিস হাওলাদার নিজ বাড়িতে আতিকের পক্ষের লোকদের দাওয়াত করে খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। এ ঘটনায় ইব্রাহিম ও তাঁর সমর্থকেরা ভীষণ ক্ষিপ্ত হন।
ওই গ্রামের চারজন জানান, সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ইব্রাহিমের সমর্থক অস্ত্রধারীরা ইদ্রিসের বাড়িতে হামলা চালিয়ে খাবারদাবারের জন্য রাখা পাতিল ও রসদ লুট করে নিয়ে যায়। দুজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আতিকের সমর্থক মুদি ব্যবসায়ী শাহজাহান দরানী তাঁর বাড়িসংলগ্ন মোহাম্মদিয়া নূরানিয়া জামে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হন। এ সময় ইব্রাহিমের শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাঁর ওপর চড়াও হয়। একই সময় আতিকের ভাই আরশাদ তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে শাহজাহানের দোকানের সামনে আসামাত্র সন্ত্রাসীরা তাঁকেও ঘিরে ফেলে। সন্ত্রাসীরা আগে শাহজাহানকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর আরশাদকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। পরে এলাকার লোকজন উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
শাহজাহানের শ্বশুর ধলু মাতুব্বর বলেন, ভোরে বাড়িসংলগ্ন মসজিদ থেকে বের হয়ে শাহজাহান সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হন। এ সময় তাঁর স্ত্রীসহ বাড়ির লোকজন বের হয়ে শাহজাহানের প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন। কান্নাকাটি করেও সন্ত্রাসীদের মন গলানো যায়নি।
ইব্রাহিম সিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
শিবচর থানার এসআই ফয়সাল হাওলাদার বলেন, এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়েছে। হত্যা মামলা দুটির বাদী হলেন নিহত আরশাদের ভাই খোরশেদ মাতবর ও নিহত শাহজাহানের স্ত্রী শাহিদা আক্তার। অস্ত্র মামলাটি পুলিশ বাদী হয়ে করেছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চারটি রামদা, ১২টি ঢাল ও ১৬টি টেঁটা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ জনকে।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment