প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকার সংশ্লিষ্টদের একটি অংশ জড়িত বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে অভিযোগ করেছে তা অস্বীকার করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিআইবির অভিযোগ অস্বীকার করেন শিক্ষামন্ত্রী।
এর আগে সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস : প্রক্রিয়া, কারণ ও উত্তরণের উপায়’শীর্ষক টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে ওই তথ্য উঠে এসেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, `টিআইবিকে বলবেন, গতকাল-আজকের মিডিয়া-পত্রিকা দেখতে, এদেরকে ধরা হয় কি না, কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগে পড়ুক, তারপর মনিটরিং করতে বলবেন। যারা প্রশ্নফাঁস করে তারা গ্রেফতার হয়ে সাত দিন ধরে মিডিয়ার সামনে। আপনারাইতো রিপোর্ট দিচ্ছেন। রিপোর্ট আগে পড়ুক তারপর...।’
এ সময় শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গত এসএসসি-এইচএসসিতে প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। কিছু লোক প্রশ্ন কোনো রকম বানিয়ে টাকা-পয়সা আয় করেছে। আমরা ২০/২৫ জনকে ধরেছি, মিডিয়াকে বলিনি, প্রকাশ করিনি।’
সচিব আরো বলেন, ‘এবার কারিগরিতে প্রশ্ন ফাঁসের একটা বিষয় আছে। জানার সঙ্গে সঙ্গে মামলা করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে। আইটি দিয়ে খুঁজে বের করা হয়েছে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
স্থায়ীভাবে প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে প্রশ্ন ছাপার পদ্ধতি পরিবর্তন করে ‘এক্সাম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ করার কাজ চলছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের ধরার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি সপ্তাহে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
টিআইবির গবেষণায় দেখা যায়, প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিতরণের সঙ্গে যে সকল সরকারি অংশীজন জড়িত, তাদের একাংশ কোনো না কোনো পর্যায়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত। এ ছাড়া ফাঁসকৃত প্রশ্ন ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকে বেসরকারি পর্যায়ের একাধিক অংশীজন। প্রশ্ন তৈরি, ছাপানো ও বিতরণের তিনটি পর্যায়ে প্রায় ১৯টি ধাপে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঝুঁকি বিদ্যমান রয়েছে বলেও গবেষেণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে এ প্রবণতা শুরু হয়। গত শতকের সত্তরের দশক থেকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটলেও গত পাঁচ বছরে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ একটি নিয়মিত ঘটনা হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছরের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৩টি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২০১৩ ও ২০১৪ সালের পিইসিই (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী) ও জেএসসি পরীক্ষার সবগুলো পত্রের প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগের তথ্য পাওয়া যায়।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment