সিলেটের শিশু রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশে ফিরেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০৪০ বিমানে কামরুলকে নিয়ে ঢাকা পৌঁছান তিন পুলিশ কর্মকর্তা। কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গত ১২ অক্টোবর সৌদি আরব গিয়েছিলেন পুলিশের তিন কর্মকর্তা- পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল করিম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশানর রহমত উল্লাহ ও বিমানবন্দর থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আ ফ ম নিজাম উদ্দিন।
পরে পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) নজরুল ইসলাম বলেন, যেখানে বন্দিবিনিময়
চুক্তি ছিল না সেই আইনগত সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রাজন
হত্যার প্রধান আসামি কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। সৌদির সঙ্গে
আমাদের বন্দিবিনিময় চুক্তি নেই, বন্দি আসামিদের যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়
ফিরিয়ে আনা হয়, সেই পথটি আমাদের সামনে খোলা ছিল না। কিন্তু ইন্টারপোলের
সহযোগিতার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি।
ইন্টারপোলের সব বিষয়ে আমরা কথা বলতে পারি না। কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। তবে
ইন্টারপোল এ ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে।
রাজন হত্যা মামলায় এখনো যে দুই আসামি
পলাতক রয়েছেন তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে
সাংবাদিকদের এও জানানো হয় যে, গত ১০ বছরে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এ নিয়ে
পাঁচ আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো।
নজরুল ইসলাম জানান, কামরুলকে এখন সিলেটে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগামীকাল তাকে সেখানকার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
পরবর্তীতে আদালত নির্ধারণ করবে তার বিচারিক প্রক্রিয়া কী হবে, তার ভবিষ্যৎ
কী দাঁড়াবে।
তিনি জানান, সৌদিকে তাকে (কামরুল) ধরার পর
একটি কনস্যুলেটে তাকে রাখা হয়েছিল। পরে কনস্যুলেট থেকে তাকে জেদ্দার একটি
থানায় ও পরে ১২ জুলাই রিয়াদের হাজতে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে তাকে
বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছে।
সিলেট থেকে কামরুলের পালানোর ঘটনায়
পুলিশের গাফিলতি ছিল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,
পুলিশের গাফিলতি ছিল, যারা গাফিলতি করেছিল তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে এবং
তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্চের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি
নূর হোসেনকে দেশে ফেরানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল বলেন, তাকে
ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। সব ধরনের রীতিনীতি মেনেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা
হবে।
গত ৮ জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে শিশু
সামিউল আলম রাজনকে ভ্যান চুরির অভিযোগে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে
নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর সৌদি আরব পালিয়ে
গিয়ে গত ১৩ জুলাই আটক হন কামরুল।
কামরুল ছাড়াও রাজন হত্যা মামলার বাকি
আসামিরা হলেন- মুহিদ আলম, আলী হায়দার, শামীম আহমদ, পাভেল আহমদ, ময়না
চৌকিদার, রুহুল আমিন, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, দুলাল আহমদ, নুর মিয়া, ফিরোজ
মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী।
রাজনকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ও গণমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিয়ে সরব হলে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়।
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment