নিজস্ব প্রতিবেদক,মাদারীপুরঃ খাবার সংকটে মাদারীপুরের অসংখ্য বানর। এ কারণে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বানরগুলো। অসহায় হয়ে পড়েছে দেড় হাজারেরও বেশি বানর।
বনবিভাগ বানরগুলোর জন্য নয়াচর এলাকায় ‘ইকোপার্ক’ নামে একটি অভয়াশ্রম তৈরি করেছে। কিন্তু বানরগুলোকে সেখানে নেয়া সম্ভব হয়নি।
মাদারীপুরে এক সময় প্রচুর বন-জঙ্গল ছিল। সহায়ক পরিবেশ থাকায় মাদারীপুরের চরমুগরিয়া, কুলপদ্বি এবং পুরানবাজার এলাকায় প্রচুর বানর ছিল। বানরগুলোকে চরমুগরিয়া বন্দরের কালীবাড়ি, স্বর্ণকারপট্টি, জেটিসি, আদমজী, চাল আড়ত ও চৌরাস্তা এলাকায় বেশি দেখা যায়।
শুধু চরমুগরিয়া এলাকাতেই খাদ্য সংকট নিয়ে আড়াই হাজার বানর কোনোমতে টিকে আছে। এই এলাকায় যে কেন্দ্রগুলোতে বানরগুলোকে খাবার দেয়া হতো এখন সেখানে খাবার দেয়া হয় না।
সামাজিক বন বিভাগ ফরিদপুরের তত্ত্বাবধানে এক সময় বানরের জন্য খাবার সরবরাহ কর্মসূচি চালু থাকলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। খাদ্য সরবরাহ বন্ধ থাকায় বানরগুলো বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে হানা দিচ্ছে।
সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে চরমুগরিয়া অবস্থিত। এক সময় এখানে জনবসতি ছিল কম, তখন থেকে হাজারখানেক বানর এখানে মুক্ত পরিবেশে বেঁচে ছিল। তবে ক্রমবর্ধমান মানুষের চাপে পরিবেশটা এখন অনিবার্যভাবে বানরদের প্রতিকূলে চলে গেছে।
মাদারীপুরের সামাজিক বনায়ন জোনের সহকারী বনরক্ষক দীপক রঞ্জন সাহা বলেন, “বানরের খাদ্য সরবরাহের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধান বনসংরক্ষক, যশোরের বনসংরক্ষক এবং বিভাগীয় বন কর্মকর্তাবৃন্দ তৎপর।”
স্থানীয় সুত্র জানায়, ৬ মাস পর পর বানরগুলো বাচ্চা দেয়। কিন্তু সে বানরগুলো কোথায় যাচ্ছে কেউ জানে না। ক্ষুধার জ্বালায় ইতোমধ্যে অনেক বানর মাদারীপুর শহরে ও অন্যান্য জায়গায় চলে গেছে।
সম্প্রতি মাদারীপুর সার্কিট হাউসের একটি সভায় মাদারীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মিয়াজউদ্দিন খান চরমুগরিয়ার বানরদের খাবার দেয়ার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আগে জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ থেকে বানরদের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এখন বিষয়টি বন্ধ রয়েছে। বানরগুলোকে খাবার ব্যাপারে নৌ-মন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়।”
এ প্রসঙ্গে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেন, “বানরগুলোর জন্য ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। তবুও বানরগুলো অবস্থান চরমুগরিয়ায় আছে। তাদের খাবার বা স্থানান্তরের বিষয়ে ভেবে-চিন্তে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment