নিউইয়র্কের কুইন্সে প্রকাশ্যে বন্দুক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক বাংলাদেশি ইমাম ও তার সহকারী নিহত হয়েছেন।
শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১টা ৫০ মিনিটে কুইন্সের ওজন পার্কে আল ফুরকান জামে মসজিদের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা আকুঞ্জি ও তার সহকারী তারা উদ্দিন জোহরের নামাজের পর মসজিদ থেকে বেরিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন। পথে পেছন থেকে এক বন্দুকধারী তাদের মাথায় গুলি করে।
দুজনকে নিকটবর্তী জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক আকুঞ্জিকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রায় চার ঘণ্টা পর মারা যান তার সহকারী।
বিবিসি ও নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, তিন সন্তানের জনক মাওলানা আকুঞ্জি (৫৫) প্রায় দুই বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে আসেন এবং সেখানে একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তার সহকারী ছিলেন তারা উদ্দিন (৬৪)।
নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এক বন্দুকধারী ইমাম আকুঞ্জি ও তার সহকারী তারা উদ্দিনকে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, হামলাকারী হিস্পানিক এবং বেশ লম্বা। গাঢ় নীল শার্ট ও খাটো প্যান্ট পরিহিত ওই ব্যক্তির হাতে বড় একটি হ্যান্ডগান ছিল। গুলি করার পর সে দ্রুত পালিয়ে যায়।
মসজিদ ও আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তারা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। তাদের দাবি, ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তাদের ওপর এ হামলা হয়েছে।
পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর হেনরি সটনার সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন, ইমাম ও তার সহকারী ৭৯ নম্বর সড়ক দিয়ে লিবার্টি অ্যাভিনিউতে ঢোকার মুখে হামলাকারী তাদের পেছন থেকে গুলি করে।
তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে তারা দেখতে পেয়েছেন, বন্দুকধারী পুরুষ লোকটির গায়ে গাঢ় নীল রঙের শার্ট ছিল। পুলিশ হামলাকারীকে ধরতে ব্যাপক তল্লাশি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।’
তবে পুলিশ দাবি করেছে, এ ঘটনার সঙ্গে তারা এখনো ‘ঘৃণামূলক অপরাধের’ যোগসূত্র পায়নি। তা ছাড়া হত্যার উদ্দেশ্যও তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। স্থানীয়রা এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং এটিকে বিদ্বেষপ্রসূত হামলা বলে দাবি করে।
ইমাম আকুঞ্জির ভাতিজি রাহি মাজিদ বলেন, তারা চাচা অত্যন্ত নিরীহ মানুষ ছিলেন। তিনি কখনো একটা মাছিকেও আঘাত করেননি। এলাকাবাসী জানান, আকুঞ্জি অত্যন্ত ধার্মিক এবং সবার খুব শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন।
তারা উদ্দিনের ভাই মাসুক উদ্দিন ডেইলি নিউজকে জানিয়েছেন, একটি গুলি তার ভাইয়ের মাথায় বিদ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া তার পিঠেও গুলি লেগেছে। মাসুক আরো জানান, এ ঘটনায় তিনি খুবই মর্মাহত। তার ভাই খুবই সাদাসিধে মানুষ ছিলেন। তিনি শুধু মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তেন এবং তারপর বাসায় চলে আসতেন। কারো সঙ্গে তার কোনো বিরোধ ছিল না।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment