মাদারীপুরে শ্রেণি কক্ষে হাসি দেওয়ার কারণে শিক্ষিকার বেত্রাঘাতে সম্পা আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রীর একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চোখে রক্তক্ষরণ অবস্থায় আজ মঙ্গলবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্পাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা দিল আফরোজ রত্নাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ।
আহত সম্পা শহরের পানিছত্র এলাকার সিরাজুল হক হাওলাদারের মেয়ে ও দরগাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
আহত শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, গতকাল সোমবার দুপুরে শহরের দরগাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরতির পর শ্রেণি কক্ষে ক্লাস নিতে প্রবেশ করেন শিক্ষিকা দিল আফরোজ রত্না। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকা সকলে দাঁড়িয়ে শিক্ষিকাকে সম্মান প্রদর্শন করেন। এ সময় ৫ম শ্রেণির ছাত্রী সম্পা আক্তার (১১) দুষ্টুমির ছলে হেসে উঠে। এতে শিক্ষিকা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীকে বেত দিয়ে পিটাতে শুরু করেন। বেত্রাঘাতের এক পর্যায়ে সম্পার বাম চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে। গুরুতর আহতাবস্থায় সম্পাকে তার সহপাঠিরা বাসায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে পরিবারের লোকজন মাদারীপুর চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আজ মঙ্গলবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থী সম্পা বলে, ম্যামকে মারতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ম্যাম শরীরের একাধিক স্থানে বেত দিয়ে পিটিয়েছেন। আর দুষ্টুমি করব না ম্যামকে বললেও ম্যাম আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
মাদারীপুর চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক এ.আর অমিত বলেন, 'ওই শিক্ষার্থীর চোখ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে। আর পর্যাপ্ত চিকিৎসা না নিলে চোখ নষ্ট হয়ে যাবার শঙ্কা রয়েছে। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেছি।'
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, 'এ খবর জানার পরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।'
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আইনগত সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।'
এদিকে সম্পার বাবা সিরাজুল হক হাওলাদার বলেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ এখন কি হবে কিছুই জানি না। এ ঘটনা আর যেন না ঘটে, তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
অপরদিকে অভিযুক্ত শিক্ষিকা দিল আফরোজ রত্নার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment