ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনে আবারও মাদারীপুরেই আস্থা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বিগত কমিটিতে মাদারীপুরের সন্তান সাইফুর রহমান সোহাগ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে মাদারীপুরের আরেক কৃতি সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা গোলাম রাব্বানীকে। তিনি বিগত কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
এদিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে আবারও মাদারীপুরের প্রতি আস্থা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামের সরকারি চাকুরীজীবী বাবা এম এ রশিদ আজাদ সেটেলমেন্টের একজন কর্মকর্তা। বাবার চাকরির সুবাধে গোলাম রাব্বানীর ছোটবেলা কেটেছে গোপালগঞ্জ শহরে। শহরের অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে বাবার বদলিজনিত কারণে তিনি ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দা সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হন ঢাকার উত্তরা রাজউক মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখান থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
উত্তরা রাজউক মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনাকালে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে। মিষ্টভাষী ও সুবক্তা হিসেবে অল্পদিনে তিনি দলীয় নেতাদের নজর কাড়েন। অত্যন্ত বিনয়ী ও সদালাপের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝেও বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন গোলাম রাব্বানী । পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
গোলাম রাব্বানীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে থাকাকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও আপদে-বিপদে সর্বদা এগিয়ে আসতেন গোলাম রাব্বানী। তিনি ঢাকার বিভিন্ন বস্তির ছিন্নমূল শিশুদের পড়াশুনার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে সর্বমহলে প্রসংশিত হয়েছেন। সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতে মানবিক শাখায় এ প্লাস পাওয়া মেধাবী ছাত্রী কাকলীকে প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে অবদান রাখায় ডিএমপি কমিশনারের কাছ থেকে সাহসী পুরস্কার লাভ করেছেন।
অসহায় মানুষের পাশে দাড়াঁনো, তাদের আর্থিক সহায়তা, গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাহায্য করাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য গোলাম রাব্বানী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
গোলাম রাব্বানী পারিবারিক ভাবে আওয়ামী পরিবারের সন্তান। গোলাম রাব্বানীর মা মরহুমা তাছলিমা বেগম ছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও স্থানীয় ইশিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম সামশুল হক মুন্সীর বড় মেয়ে।
মরহুম সামশুল হক মুন্সী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর এবং শেখ পরিবারের একজন অন্যতম সুহৃদ। মাদারীপুর অঞ্চলে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় সামশুল হক মুন্সীর যথেষ্ঠ অবদান রয়েছে। গোলাম রাব্বানীর মা তাছলিমা বেগম ছিলেন রাজৈর কলেজ ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক (১৯৮৩-১৯৯১)। তিনি নব্বয়ের দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও এ এলাকায় ছাত্রলীগকে সংগঠিত করার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। গোলাম রাব্বানীর মা তাছলিমা বেগম গত ১৯ জুলাই আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন।
অপরদিকে গোলাম রাব্বানীর বাবা এম এ রশিদ আজাদ ভূমি মন্ত্রালয়ের অধীনে কারিগরি কর্মকর্তা হিসেবে বর্তমানে ফরিদপুরে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে তিনি রাজৈর কেজেএস হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। সে সুবাদে তিনি এলাকায় শিক্ষক হিসেবে সমধিক পরিচিত। অত্যন্ত সৎ ও বিনয়ী হওয়ায় এলাকায় তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
গোলাম রাব্বানীর একমাত্র ছোট ভাই গোলাম রুহানী (সবুজ) ৩৫তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডার মনোনীত হয়েছেন। এর আগে তিনি ৩৪তম বিসিএসে আনসার ক্যাডার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।
গোলাম রাব্বানীর বাবা এম এ রশিদ আজাদ বলেন, আমার ছেলে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় আমি অত্যন্ত খুশি এবং এলাকাবাসীও আনন্দিত। আমার ছেলেকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment