সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ এর লিখিত পরীক্ষা ডিসেম্বরের মধ্যে শুরু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, জানুয়ারির মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা ও ফেব্রুয়ারি মধ্যে ফল প্রকাশের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। সবজেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা না নিয়ে ধাপে ধাপে কয়েকটি জেলায় একত্রিতভাবে পরীক্ষা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার জানান, দীর্ঘদিন মামলার কারণে রাজস্ব খাতের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যায়নি। এ মাসের মধ্যেই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর চিন্ত-াভাবনা থাকলেও ওএমআর ফরমসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি কেনাকাটায় সরকারি ক্রয় আইন (পিপিআর) অনুসরণ করতে গিয়ে গতি কিছুটা কমে গেছে।
যেহেতু নভেম্বরে দুটি বড় পরীক্ষা আছে, তাই পরীক্ষা হল পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীর আবেদন ও পরীক্ষার হল সংকটের কারণে একসঙ্গে সারাদেশে পরীক্ষা নেয়া যাচ্ছে না। এ কারণে পরীক্ষা ডিসেম্বরে নেয়া হবে। হল পাওয়া গেলে ৩ বা ৪টি করে জেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়াও হতে পারে বলে জানান মন্ত্রী।
তথ্যমতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৩০ জুলাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ১-৩০ আগস্ট অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যেখানে ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ প্রার্থী আবেদন করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ নিয়োগে প্রায় ১২ লাখ প্রার্থী আবেদন করেছিল। এই হিসাবে আবেদনকৃত প্রার্থীর সংখ্যা এবার দ্বিগুণ। গত নিয়োগে সারাদেশে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৬২। এবার দ্বিগুণ প্রার্থী হওয়ায় কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রয়োজন হলেও উপজেলা-জেলা পর্যায়ে এতো কেন্দ্র পাওয়া কঠিন।
তাই উপজেলা সদরের কাছাকাছি পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা কেন্দ্র নির্বাচন করার পর দুই বা ততোধিক জেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় ২০ সেট প্রশ্নপত্র তৈরি করবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরিসহ পরীক্ষা গ্রহণে নেতৃত্ব দিতো ডিপিই। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আরও কড়াকড়ি আনা এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে এবার প্রশ্ন নির্বাচন ও আসন বিন্যাস নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়।
নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। পরীক্ষার সময়সূচি, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের আসন বিন্যাসের পদ্ধতি উন্নয়ন বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। পরীক্ষার সময়সূচি, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের আসন বিন্যাসের পদ্ধতি উন্নয়ন বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন জানান, বুয়েটের সঙ্গে পরীক্ষার ব্যাপারে বৈঠক হয়েছে। ওএমআর ফরম কেনা প্রক্রিয়াধীন। পরীক্ষা কেন্দ্র বৃদ্ধির জন্য উপজেলা সদরের পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কেন্দ্র নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে দেয়া হয়েছে।
প্রতিটি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্র বৃদ্ধি ও পরীক্ষা আয়োজনের জন্য সময় নির্ধারণ করা হবে। এরপর নিয়োগ পরীক্ষার সময় ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে যদি সব জেলায় কেন্দ্র খালি না পাওয়া যায় তবে কয়েকটি জেলায় সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন ধাপে নেয়ার চিন্তা থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে এবারও আগের মতই দুই স্তরেই পরীক্ষা নেয়া হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা ৮০ নম্বর ও ভাইভায় ২০ নম্বর থাকবে।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment