বঙ্গোপসাগরে সম্প্রতি সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ এরইমধ্যে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘তিতলি’ কেন সেই প্রশ্ন এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের হোমপেজ জুড়ে। শুধু ‘তিতলি’ নয় বিশ্বের সকল ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ হয় একটি নিয়ম মেনে। চলুন জেনে নেয়া যাক কী নিয়ম মেনে এই নামকরণ করা হয়।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মানুষেরা গত কয়েকশো বছর ধরে আটলান্টিক মহাসাগর এলাকায় উৎপন্ন হওয়া ঝড়গুলোর নাম দিয়ে আসছে। শুরুতে নিজেদের অঞ্চলের ঝড়গুলোকে বিভিন্ন নামে ডাকতো তারা। ১৯৪৫ সাল থেকে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে শুরু হয় ঝড়ের আনুষ্ঠানিক নামকরণ।
বিভিন্ন দেশের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা’র (ডব্লিউএমও) আঞ্চলিক কমিটি নির্ধারণ করে সকল ঘূর্ণিঝড়ের নাম। আর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যেসব ঘূর্ণিঝড় হয় সেগুলোর নামকরণ করা হয় এস্কেপ (ESCAP) নামের একটি প্যানেলের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে। ওই প্যানেলে রয়েছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা এবং ওমান।
পূর্বাভাস দেওয়াতে সুবিধা এবং সাধারণ মানুষের কাছে পূর্বাভাস ও সতর্কতা বোধগম্য করতেই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়ে থাকে।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশের পাঠানো নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নামকরণ করা হয়। বিভিন্ন অঞ্চলের ঝড়ের নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্বটি বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন প্যানেলের হাতে ন্যস্ত থাকে।
যেমন-উত্তর ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ঝড়গুলোর নামকরণের দায়িত্ব ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের। এক্ষেত্রে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আট দেশ- বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড থেকে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রস্তাব করা হয়। এই অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য ২০০০ সালে প্রথম প্রস্তাবনা আনা হয়।প্রতিটি দেশের আটটি করে প্রস্তাবিত নাম নিয়ে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরে বৈঠকের মাধ্যমে মোট ৬৪টি নামের তালিকা তৈরি হয়। আর সে তালিকা অনুযায়ীই পর্যায়ক্রমে ঝড়ের নামকরণ হয়। ঘূর্ণিঝড় যেহেতু মৃত্যু ও ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, তাই কোনো নাম পুনরাবৃত্তি করা হয় না।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের সেই তালিকা অনুযায়ীই এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘তিতলি’। ‘তিতলি’ নামটির প্রস্তাব এসেছে পাকিস্তানের কাছ থেকে।
হিন্দি ভাষার শব্দ ‘তিতলি’ অর্থ ‘প্রজাপতি’। অর্থাৎ এবার পাকিস্তানের প্রস্তাবিত নামটিই ঝড়ের নাম হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে যেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে সেটিরও নামকরণ এরইমধ্যে করা হয়েছে। পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে দাস। এই নামটি শ্রীলঙ্কার দেয়া।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment