ফেনী, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ,বরিশাল ও ভোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২১জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ফেনী: ফেনীতে কক্সবাজারগামী পিকনিকের একটি বাস দুর্ঘটনায় ০৮ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন।ভোর পৌনে ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনীর লেমুয়ায় ব্রিজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহতরা হলেন- বিক্রমপুরের অপু (৩৫), মিরপুরের ইকবাল (৩৮), মাদারীপুরের রিপন (৩০), নারায়ণগঞ্জের মুন্না খান (৩০), মিরপুরের শামীম (৩০), ছাগলনাইয়ার রাঁধানগর এলাকার শাহাদাত হোসেন (২৮) ও বিক্রমপুরের সুজন মিয়া।
আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। মহিপাল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কাওসার যুগান্তরকে বলেন, ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃত্যু হয়। আর হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও একজন মারা যান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল প্রাইম পরিবহনের বাসটি। ফেনীর লেমুয়ায় পৌঁছলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়লে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। মহিপাল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কাওসার যুগান্তরকে বলেন, ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃত্যু হয়। আর হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও একজন মারা যান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল প্রাইম পরিবহনের বাসটি। ফেনীর লেমুয়ায় পৌঁছলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
হতাহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৯ জন সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার ও বান্দরবান ভ্রমণে যাচ্ছিলেন।
ফরিদপুর: ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ তিনজন নিহত ও কমপক্ষে ৫০ যাত্রী আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- বাসচালক রওশন মিয়া, মীরাকুণ্ড নামে এক নারী ও অজ্ঞাত এক বৃদ্ধ।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভাঙ্গার নওপাড়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান এ দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহত ৫০ জনকে প্রথমে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত ২৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এদের মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেলে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়লে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল থেকে রাজশাহীগামী তুহিন পরিবহন ও ফরিদপুর থেকে টেকেরহাটগামী লোকাল বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। বাস দুটি সামনের অংশ সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তুহিন পরিবহনের যাত্রী আহত লিমা আক্তার জানান, লোকাল বাসটি উল্টোপাশে এসে আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। তখনই চালক নিয়ন্ত্রণ হারান।
একই বাসের অপর এক যাত্রী জানান, লোকাল বাসের বেপরোয়া চালানো এবং দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই সরু কালভার্ট ব্রিজ হওয়ায় ওই বাসকে সাইড দিতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
বেলা ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের কটিয়াদী উপজেলার আছমিতা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- তোফাজ্জাল হোসেন, ওমর ও সিএনজিচালক জামাল।
আহতরা হলেন- আবুদাল কাদের, পরিমল, গিয়াস উদ্দিন ও সিরাজ মিয়া।
নিহতদের মধ্যে সিএনজিচালক জামাল উদ্দিনের বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে। অন্য দুজনের বাড়ি ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকালে যাত্রীবোঝাই একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিশোরগঞ্জ থেকে কটিয়াদীর দিকে যাচ্ছিল।
অটোরিকশাটি আছমিতার ভিটাদিয়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়। উদ্ধার করে বাকিদের বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া আহত চারজনকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কটিয়াদী হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসির উদ্দিন মজুমদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভৈরব: ভৈরবের অদূরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরা থানার মাহমুদাবাদ নামক স্থানে বাস দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত ও ১২ যাত্রী আহত হয়েছেন।
দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত যাত্রীর নাম হোসনে আরা বেগম (৫৮)। তার স্বামীর নাম সৈয়দ আলী খন্দকার, বাড়ি নরসিংদির রায়পুরা উপজেলার পাহাড়কান্দি গ্রামে।
আহতরা হলেন- নাজমা বেগম (৪৫), তার স্বামী বাক্কিউদ্দিন ভূইয়া (৫২), দুই মেয়ে ইমা বেগম (২২) ও ইভা বেগম (১৮)। আহত অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি।
আহতদের ভৈরবের বিভিন্ন হাসপাতালসহ বাজিতপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাসটি আটক করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
যাত্রীরা জানান, ভৈরব-নরসিংদীগামী একটি যাত্রীবাহী বাস মাহমুদাবাদ নামক স্থানে পৌঁছলে বিপরীতগামী একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে ব্রেক ফেল করে খাদে পড়ে যায়। এতে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম জানান, বিপরীতগামী একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে বাসটি ব্রেক ফেল করলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর বাসচালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও বাসটি আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে।
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের সখীপুরে পিকআপভ্যানের চাপায় ইসতিয়াক আহমেদ (১৭) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সখীপুর-গোড়াই সড়কের বোয়ালী উত্তরপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ইসতিয়াক আহমেদ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শাকিল আজাদের ছেলে। তিনি সরকারি মুজিব কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
সখীপুর থানার ওসি আমির হোসেন জানান, সকালে ইসতিয়াক আহমেদ মোটরসাইকেলযোগে সখীপুর থেকে নলুয়া যাওযার সময় বোয়ালী উত্তরপাড়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপভ্যান তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে গিয়ে রাস্তায় পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের কোনাবাড়ীতে তিন বাসের সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর আড়াইটার দিকে সড়ক বিভাজকের ওপর একটি বাস উঠে যায়। এ সময় পেছনে থাকা আরও দুটি বাস এসে ওই বাসটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার গোপালপুর এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় তুহিন মোল্লা (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন তার স্ত্রী সাথী বেগম (২৫)।
দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তুহিন জেলা সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ঘোষেরচর উত্তরপাড়া গ্রামের আশরাফ মোল্লার ছেলে।
কাশিয়ানী থানার এসআই প্রকাশ সরকার জানান, কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া থেকে তুহিন তার স্ত্রী সাথীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে গোপালপুর এলাকায় বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার তাদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তুহিন নিহত এবং তার স্ত্রী গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহত সাথীকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলা: ভোলায় মাহেন্দ্রচাপায় পারভেজ (৮) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের ভোলা অংশের ইলিশা ব্যারিস্টার কাছারি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পারভেজ সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের সোনাডগী গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে ব্যারিস্টার কাছারি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল পারভেজ। এ সময় ভোলাগামী একটি মাহেন্দ্র তাকে চাপা দেয়।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে মাহেন্দ্রচালককে আটক করেছে পুলিশ।
ইলিশা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রতন কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাহেন্দ্রটি স্পিডে থাকায় বাসটিকে সাইড দিতে গিয়ে শিশুটিকে চাপা দেয়। এতে শিশুটির মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। মাহেন্দ্রচালককে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া বরিশালের বাবুগঞ্জে বাসচাপায় এক মোটরসাইকেলচালক নিহত হয়েছেন।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment