ভর্তি না হয়েও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, হলে থাকছেন ৩ মাস - SongbadProtidin24Online.com

সর্বশেষ সংবাদ

SongbadProtidin24Online.com

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Wednesday, January 17, 2018

ভর্তি না হয়েও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, হলে থাকছেন ৩ মাস

ভর্তি না হয়েও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছিল এক শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মোফসেনা ত্বাকিয়া ত্বকি। শেরপুরের নালিতাবাড়ির ত্বাকিয়া নিজেকে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় আসছিল। তিনি তিন মাস ধরে শেখ হাসিনা হলে থাকছেন বলে জানিয়েছেন। 
১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আটক করে। প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে ত্বাকিয়া অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আল-আমিন হোসেন শাহেদ নামে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ ৪২ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। প্রক্টর অফিসের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা বোর্ডে ১৭ জানুয়ারি বুধবার তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত মোফসেনা ত্বাকিয়া বলেন, ‘আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি পরীক্ষা দেই, তখন ফেসবুকের মাধ্যমে তার (আল-আমিন হোসেন শাহেদ) সাথে পরিচয় হয়। সেসময় আমি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ভর্তি হতে পারি নাই এবং অপেক্ষমান তালিকায় আছি বলে জানাই। আমার তো নাতির কোটা (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) আছে, তো আমার কি সম্ভব ভর্তি হওয়া। সে বলে সম্ভব, চেষ্টা করে দেখব। ৫/৬ দিন যাবার পর সে আমাকে ফোন করে বলে, সম্ভব ভর্তি হওয়া যদি তুমি আমাকে ৪ লাখ টাকা দাও।’
তিনি বলেন, ‘পরে তাকে আমি বলি- আমার বাবা নাই, ৪ লাখ টাকা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। এর মধ্যে আস্তে আস্তে তার সাথে আমার রিলেশন বিল্ডআপ হয়। এরপর সে আমাকে বলে, বিশ হাজার টাকা দেও তোমার ভর্তির খরচের জন্য লাগবে। তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসি এবং আম্মুকে বলি বিশ হাজার টাকা পাঠাতে। আম্মু ধাপে ধাপে ওর বিকাশ নম্বরে বিশ হাজার টাকা পাঠায়। ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে সে আমাকে একটা ফর্ম দেয়; যেখানে স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানাসহ সকল তথ্য পূরণ করে আমি তাকে ফর্মটা দেই।’
ত্বাকিয়া বলেন, ‘এরপর সে আমাকে জানায়, তুমি জার্নালিজম সাবজেক্ট পাইছো। এরপর সে আমাকে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে নিয়ে আসে এবং তখন সেই ভবন থেকে একটা ফর্ম এনে আমাকে দেয়। এর আগে সে আমাকে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, এসএসসি সার্টিফিকেটের ফটোকপি, প্রশংসাপত্র আনতে বলে। রেজিস্ট্রার ভবন থেকে আনা ফর্মসহ সব কাগজপত্র তাকে আমি দেই। পরে সে ফর্মটা নিয়ে রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে জমা দেয়। আমি এর আগে মিরপুরে মামার বাসায় ছিলাম। তিন মাস হলো শেখ হাসিনা হলে উঠছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্লাশ করার সময় বিভাগের স্যার আমর রোল জানতে চায়। আমি তাকে (শাহেদ) আমার রোল নম্বরের কথা বলি। পরে সে আমার রোল নং- ২২৩৮ বলে জানায়। কিন্তু আমি আজই জানলাম আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী না।’
এ বিষয়ে অপর অভিযুক্ত আল-আমিন হোসেন শাহেদ (ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, ৪২ তম র্আবতন) অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তার কাছে ৪ লাখ টাকা চাওয়ার এবং ভর্তির বিশ হাজার টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেটা সর্ম্পূণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি তার কাছ থেকে এক পয়সাও নেই নাই। এই মেয়েকে আমি আগে কখনো দেখি নাই। কারণ তার বাসা শেরপুরে আর আমার বাসা নওগাঁতে।’
আল-আমিন আরও বলেন, ‘আমি যেখানে তার কাছ থেকে কোনো টাকা নেই নাই, সেখানে রেজিষ্ট্রেশন কার্ড নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমার সাথে তার ভর্তি সংক্রান্ত ব্যাপারে কোনো কথা হয় নাই।’
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের বিভাগে দীর্ঘ চার মাস যাবৎ ক্লাস করে আসছিল। তবে সে নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করত না। তাকে ভর্তি রোল নম্বরসহ সকল কাগজপত্র আমারা দেখাতে বলি। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি- সে আমাদের বিভাগের ছাত্রী না। তার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।’
তিনি অারও বলেন, ‘ভর্তি সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে নেই এবং ওই ছাত্রীও আমাদের দেখাতে পারে নাই। অনেক সময় কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে দেরিতে রোল নম্বর পেয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা। তাই বিষয়টি বিভাগের শিক্ষকদের নজরে এতদিন আসেনি।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘কলা ও মানবিক অনুষদের ডীন অফিসের মাধ্যমে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সভাপতির পক্ষে থেকে একটি অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। তদন্ত করে ভর্তি জালিয়াতির সত্যতা পেয়েছি। ত্বাকিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি। সুতরাং সে আমাদের ছাত্রী নয়। এখন প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here