শীতে কাঁপছে সারাদেশ। চলমান শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে। সোমবার (৮ জানুয়ারি) পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
সোমবার সকালে ঢাকা আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সামছুদ্দীন আহমদ জানান, ভোরে পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার দেশের সর্বনিম্ন রেকর্ড করা হয়। যা বাংলাদেশের স্মরণকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।স্বাধীনতার আগে ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এরপর আরও কোনদিন তাপমাত্রা এত নিচে নামেনি।
এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের জেলা নীলফামারীর তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এসেছে। এর পাশের জেলা দিনাজপুরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা আবহাওয়া কার্যালয় আরো জানিয়েছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় সোমবার ভোরে তাপমাত্রা ২ দশমিক শূন্য ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এর পাশের উপজেলা ডিমলায় তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানীতে সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড ভোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে আমাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর আবহাওয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন।
আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, এ মাসে আরো দুটি শৈত্যপ্রবাহ দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে গরিব ও দরিদ্র মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে সকালে কাজে যেতে পারছেন না। কয়েক দিন থেকে কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাতে কুয়াশার টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে।
সূর্যের মুখ দেখা গেলেও কনকনে বাতাস অব্যাহত রয়েছে। রাতের মতো দিনের বেলায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। বাতাসে ঠাণ্ডার তীব্রতা এতটাই বেশি যে খুব বেশি প্রযোজন ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হচ্ছেন না।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, সেখানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। এতে জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে।
সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই জেলায় এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আকতার এ তথ্য জানিয়েছেন।
এই তাপমাত্রায় জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। আকস্মিক এই শীতের কারণে শীতার্ত মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বাড়ছে শীতজনিত রোগবালাই। সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার প্রায় তিন গুণ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। এদিকে শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচল দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
আবহাওয়ার সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
No comments:
Post a Comment