বিদায় কিংবদন্তি রিচি বেনো !!!!! - SongbadProtidin24Online.com

সর্বশেষ সংবাদ

SongbadProtidin24Online.com

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday, April 10, 2015

বিদায় কিংবদন্তি রিচি বেনো !!!!!


‘মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়’। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট কিংবদন্তি ৮৪ বছর বেঁচে ছিলেন। শুক্রবার তিনি ত্বকের ক্যান্সারের কাছে হার মেনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। তার শারীরিক মৃত্যু হয়েছে বটে, কিন্তু তিনি তার কীর্তি ও কর্মের মধ্যে বেঁচে থাকবেন শত শত বছর।

তাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য যত শব্দই ব্যবহার করা হোক না কেন সবই কম হয়ে যাবে। যখন খেলোয়াড় ছিলেন তখন যেমন বল ও ব্যাট মাঠে মাঠ কাঁপিয়েছেন। পরবর্তীতে ধারাভাষ্যকার হিসেবেও অসংখ্য সুনাম কুড়িয়েছেন। সাফল্য তার হাতে ধরা দিয়েছে মুড়ি-মুড়কির মতো! তাইতো ক্রিকেট বিশ্বে অনুকরণীয়-অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন চিরদিন।

কিংবদন্তি এই অজি ক্রিকেটার ১৯৩০ সালের ৬ অক্টোবর নিউ সাউথ ওয়েলসের পেনরিথে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি ক্রিকেট পরিবার থেকে উঠে আসেন। তার বাবা লুইসও একজন ক্রিকেটার ছিলেন। লেগ স্পিনার হিসেবে তিনি পেনরিথের হয়ে সিডনি গ্রেড ক্রিকেট খেলতেন। সেন্ট মাইরিসের বিপক্ষে একবার দুই ইনিংস মিলে ৬৫ রান দিয়ে ২০ উইকেট নিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।

তার বাবা পরবর্তীতে পারনিথ ছেড়ে দক্ষিণ সিডনির পারমাত্মায় চলে আসেন। এখানেই বেড়ে ওঠেন রিচি বেনো। বাবার কাছ থেকে শিখে নেন লেগ স্পিন, গুগলি ও টপ স্পিন। বেনো পারমাত্মা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেন। ১৬ বছর বয়সে কাম্বারল্যান্ডের হয়ে একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে তার অভিষেক হয়। ১৮ বছর বয়সে তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসের যুব দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ৪৭ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়। কিন্তু অভিষেকে সুবিধা করতে না পারায় ছিটকে যান নিউ সাউথ ওয়েলসের মূল একাদশ থেকে। এক বছর মূল একাদশের বাইরে থাকার পর দ্বিতীয়বার যখন তিনি সুযোগ পান তখন নিজেকে প্রমাণ করেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২৫৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে করেছেন ১১ হাজার ৭১৯ রান। যার মধ্যে ২৩টি শতক ও ৬১ অর্ধশতক রয়েছে। সর্বোচ্চ স্কোর ১৮৭। আর বল হাতে নিয়েছেন ৯৪৫ উইকেট।

তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। যেখানে ব্যাট হাতে তিনি ২ হাজার ২০১ রান করেছেন। টেস্টে ৩টি শতক ও ৯টি অর্ধশতক রয়েছে তার। সর্বোচ্চ সংগ্রহ ১২২ রান। টেস্টে বল হাতে ২৪৮ উইকেট নিয়েছেন। তার সেরা বোলিং ফিগার ১০৫ রানে ১১ উইকেট। ২৮টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বকালীন সময়ে অস্ট্রেলিয়া কোনো টেস্ট সিরিজ হারেনি।
১৯৬৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি অবসর নেন। এরপর থেকে ধারাভাষ্যকার হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। অবশ্য ১৯৬০ সালেই তিনি প্রথম বিবিসি রেডিওতে ধারাভাষ্য দেন। এরপর তিনি টেলিভিশন ধারাভাষ্যকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ফুলটাইম ক্রীড়া সংবাদিক ও ধারাভাষ্যকার হয়ে যান। ১৯৯৯ সালে তিনি বিবিসি ছেড়ে চ্যানেল ফোরে যোগ দেন। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল নাইনের হয়ে ধারাভাষ্য দিয়েছেন। তিনি সর্বমোট প্রায় ৫০০ টেস্ট ম্যাচে ধারাভাষ্য দিয়েছেন। সবশেষ তিনি ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডে ধারাভাষ্য দেন।

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেটারদের একজন এবং প্রথম সারির এ ধারাভাষ্যকার ত্বকের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শেষ দিক থেকে গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপে তার ধারাভাষ্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় তিনি সেটা করতে আর সহস করেননি। তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া দল কখনো টেস্ট সিরিজ হারেনি। কিন্তু শুক্রবার ত্বকের ক্যান্সারের কাছে হার মানেন কিংবদন্তি রিচি বেনো। চির বিদায় নেন ক্রিকেট বিশ্ব থেকে। তার এই বিদায়ে শোকাভূত ক্রিকেট বিশ্ব ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

তিনি ছিলেন। তিনি থাকবেন। তার বয়সের মধ্যে নয়, কর্মের মধ্যে। মানুষ তার কীর্তির জন্য তাকে স্মরণ করবে বহু বছর।

সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here