আজ ২২ আগস্ট। আজকের দিনে বাংলাদেশের মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং সংগীতের ৪ জন বিখ্যাত মানুষের জন্মদিন যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বমহিমাময় উজ্জ্বল।
মোশাররফ করিম
মোশাররফ করিম ১৯৭০ সালের ২২ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদের অঙ্গভঙ্গি, গলার স্বর নকল করার অভ্যাসটা তার ছিল শুরু থেকেই। বাবার প্রশিক্ষণের কল্যাণে আবৃত্তি করত চমৎকার। হাইস্কুলে ওঠার পর এসব আপাত ছোটখাটো গুণই আলাদা করে তুলতে শুরু করল মোশাররফকে। স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মানেই মোশাররফ আর মোশাররফ। আবৃত্তিতে প্রথম পুরস্কার তো অভিনয়ে জোরদার হাততালি। একই সঙ্গে চলছিল যাত্রাপালায় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়।
মোশাররফ করিম ১৯৭০ সালের ২২ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদের অঙ্গভঙ্গি, গলার স্বর নকল করার অভ্যাসটা তার ছিল শুরু থেকেই। বাবার প্রশিক্ষণের কল্যাণে আবৃত্তি করত চমৎকার। হাইস্কুলে ওঠার পর এসব আপাত ছোটখাটো গুণই আলাদা করে তুলতে শুরু করল মোশাররফকে। স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মানেই মোশাররফ আর মোশাররফ। আবৃত্তিতে প্রথম পুরস্কার তো অভিনয়ে জোরদার হাততালি। একই সঙ্গে চলছিল যাত্রাপালায় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়।
তার অভিনয়ে দক্ষতা জন্ম নেয় তার স্কুল থিয়েটারে। এসএসসি পাস করে ১৯৮৬ সালে ঢাকায় এসে নাম লিখিয়েছিলেন নাট্যকেন্দ্রে। সেখানেই পেলেন তারিক আনাম খান, ঝুনা চৌধুরী, জাহিদ হাসান এবং তৌকির আহমেদের মতো মানুষজনের সাহচর্য। সেটাই তাকে গড়ে দিয়েছিল অনেকখানি। মঞ্চে তিনি অভিনয় করেন বিচ্ছু, তুঘলক, সুখ, হয়বদন, ক্রসিবল প্রভৃতি নাটকে। টিভি নাটকের কিছু কিছু প্রস্তাব আসত ঠিক, কিন্তু প্রায় সময়ই ব্যাটেবলে মিলত না। প্রথম টিভি নাটক ক্যারাম করতে গিয়ে বুঝলেন, টিভি নাটকেও মঞ্চের মতো নিবেদিতপ্রাণ মানুষজন আছে। চরিত্রের মধ্যে চোখকান বুজে ডুব দেওয়ার সুযোগ আছে। আর সেটাই আমূল পাল্টে দিল মোশাররফকে।
ক্যারাম নাটকের পর আর পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ ছিল না মোশাররফ করিমের। জড়িয়ে গেলেন সালাউদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক ‘ভবের হাট’ নাটকের সঙ্গে। ‘পিক পকেট’, ‘লস প্রজেক্ট’ কিংবা তৌকির আহমেদের ‘দারুচিনি দ্বীপ’ থেকে শুরু করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ধারাবাহিক নাটক ‘৪২০’, সবখানেই সমান সাবলীল মোশাররফ করিমকে সবিস্ময়ে আবিষ্কার করেছেন এ দেশের ছোটপর্দার দর্শক। ‘জয়যাত্রা’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। তৌকীর আহমেদের নতুন ছবি ‘রূপকথার গল্পে’ একটি অতিথি চরিত্রে কাজ করেছেন।
এ ছাড়াও জিম্মি, দুই রুস্তম, অন্তনগর, ফ্লেক্সিলোড, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, আউট অফ নেটওয়ার্ক, সাদা গোলাপ, ৪২০, জুয়া, সুখের অসুখ, সিরিয়াস কথার পরের কথা, সন্ধান চাই, ঠুয়া, লস, সিটি লাইফ, বিহাইন্ড দ্য সিন তার কিছু বিখ্যাত নাটক।
২০১৩ সালে তিনি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘টেলিভিশন’ ছবিতে অভিনয় করেন। বক্স অফিসে ঝড় তুলে দেয় এই ‘টেলিভিশন’।
ফজলুর রহমান বাবু
ফজলুর রহমান বাবু একাধারে অভিনেতা ও গায়ক হিসেবে সুপরিচিত একজন মানুষ। তার ডাক নাম বাবু। তিনি এ পর্যন্ত একশতেরও বেশি টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও বাংলা সিনেমাতেও তার পদচারনা রয়েছে।
ফজলুর রহমান বাবু একাধারে অভিনেতা ও গায়ক হিসেবে সুপরিচিত একজন মানুষ। তার ডাক নাম বাবু। তিনি এ পর্যন্ত একশতেরও বেশি টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও বাংলা সিনেমাতেও তার পদচারনা রয়েছে।
ফজলুর রহমান বাবু জন্মেছেন ফরিদপুর জেলায় ১৯৬০ সালে। ছোটবেলার বেশিরভাগ সময় তিনি ফরিদপুরেই কাটিয়েছেন। ১৯৭৮ সালে ফরিদপুরের টাউন থিয়েটার এবং পরবর্তিতে ‘বৈশাখী নাট্য গোষ্ঠী’ এর সঙ্গে যোগদানের মধ্য দিয়ে তিনি তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ওই একই বছরে বাবু প্রথমবারের মত ‘ন্যাশনাল ড্রামা ফেস্টিভাল’ –এ অভিনয় করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে তিনি অগ্রণী ব্যাংক এ চাকরি নেন এবং ঢাকায় বদলি হয়ে চলে আসেন। ঢাকায় এসে তিনি ‘আরন্যক’ নাট্যদলে যোগ দেন। এই থিয়েটারে তিনি বেশ কিছু মঞ্চ নাটক করেন যেমন- পালা, পাথর, ময়ূর সিংহাসন।
বাবু তার টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘মৃত্যু ক্ষুধা (১৯৯১)’ নাটক দিয়ে, যা বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছিল। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হল- পাঞ্জাবীওয়ালা, ৫১’বর্তী, 69, দৈনিক তোলপাড়, রঙের মানুষ, ঘরকুটুম, ব্যস্ত ডাক্তার, ঘটক পাখিভাই, হাটকুড়া প্রভৃতি।
ফজলুর রাহমান বাবুর অভিনীত বাংলা সিনেমাগুলো: দারুচিনি দ্বীপ, মনপুরা, বিহঙ্গ, স্বপ্ন ডানায়, বৃত্তের বাইরে, শঙ্খনাদ, মেড ইন বাংলাদেশ।
২০০৪ সালে ফজলুর রাহমান বাবু ‘শঙ্খনাদ’ ছায়াছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত হন। এ ছাড়াও তিনি একাধিক বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, ডায়মন্ড-আরটিভি স্টার পুরস্কার, পদ্ম পুরস্কার এবং বাচসাস (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি) পুরস্কার পেয়েছেন।
মনপুরা ছবিতে একটি গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাবু তার আরো একটি প্রতিভার জানান দেন। তিনি তার প্রথম একক মিউজিক অ্যালবাম ‘ডুবাডুবি’ বের করেন ২০০৯ সালে। এ ছাড়াও ২০০৮ সালে ‘মনচোরা’ নামক একটি মিক্সড অ্যালবামে তিনি চারটি গান গেয়েছেন। ‘কৃষ্ণকুমারী’ তার অপর একটি মিক্সড অ্যালবাম।
রুমানা রশিদ ঈশিতা
রুমানা রশিদ ঈশিতার জন্মদিনও ২২ আগস্ট। ঈশিতা বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকা। ১৯৮৬ সাল থেকে ঈশিতা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। নতুন কুঁড়ি টিভি অনুষ্ঠানে শিশু শিল্পী হিসেবে তিনি প্রথম খ্যাতি লাভ করেন। এরপর তিনি অভিনেত্রী ও মডেল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার পুরো নাম রুমানা রশিদ ঈশিতা। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নৃত্য এবং গানে পারদর্শী।
রুমানা রশিদ ঈশিতার জন্মদিনও ২২ আগস্ট। ঈশিতা বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকা। ১৯৮৬ সাল থেকে ঈশিতা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। নতুন কুঁড়ি টিভি অনুষ্ঠানে শিশু শিল্পী হিসেবে তিনি প্রথম খ্যাতি লাভ করেন। এরপর তিনি অভিনেত্রী ও মডেল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার পুরো নাম রুমানা রশিদ ঈশিতা। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নৃত্য এবং গানে পারদর্শী।
ঈশিতার অভিনয়ে হাতেখড়ি ছোটবেলা থেকেই। বিটিভির নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় ‘ফালানি’ চরিত্রে তার অসাধারণ অভিনয় এখনো দর্শক হূদয়ে অটুট। ঈশিতার প্রথম অভিনীত নাটক ছিল ইমদাদুল হক মিলনের রচনায় ও ফখরুল আবেদীনের পরিচালনায় ‘দু’জনে’। এই নাটকে তিনি আফজাল হোসেন ও শান্ত ইসলামের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন।
বড়বেলায় শহীদুল হক খানের ‘তিথি’ নাটকের তিথি চরিত্রের মধ্যদিয়ে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু হয় ঈশিতার। ‘নতুন কুঁড়ি’র সেই কুঁড়িটি আজ মস্ত বড় এক ফুলে পরিণত হয়েছে। ঈশিতা এখন পরিচালনাতেও নিজের মুন্সিয়ানা ফুটিয়ে তুলেছেন। তার প্রথম পরিচালিত নাটক ‘এক নিঝুম অরণ্যে’।
প্রকৌশলী আরিফ দৌলাকে বিয়ে করেন ঈশিতা। ঈশিতার কর্মজীবন বেশ সমৃদ্ধ। অভিনয়, নৃত্যশিল্পী, গায়িকা, লেখিকা সকল গুণে গুণান্বিতা ঈশিতা। এ ছাড়া চাকরি করেন চ্যানেল আইয়ে। ‘টপ মডেল’, ‘ক্ষুদে গানরাজ’ আর ‘সেরা নাচিয়ে’- তিনটি রিয়ালিটি শোর প্ল্যানিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। এ পর্যন্ত ৭ টি গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে এবং ২টি বই প্রকাশিত হয়েছে। বই দুইটি- স্বপ্ন ও স্বপ্নীল এবং নীরবে। এ ছাড়া ‘ভালোবাস, বাঁচো’ নামের একটি নাটক পরিচালনা করছেন তিনি।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক: আপনাঘর, চক্রবলয়, দেখা, সাদাপাতায় কালো দাগ, দুজনে, তিথি, থাকা না থাকার মাঝখানে, কাগজের গল্প ইত্যাদি।
ডলি সায়ন্তনী
ডলি সায়ন্তনীর জন্ম ২২ আগস্ট পাবনা জেলায়। তার শৈশব কাল কেটেছে পাবনাতেই। পরিবারে ভাই বাদশা বুলবুল, বোন পলি সায়ন্তনিও জনপ্রিয় শিল্পী। মা মনোয়ারা বেগমও যুক্ত ছিলেন গানের সঙ্গে।
ডলি সায়ন্তনীর জন্ম ২২ আগস্ট পাবনা জেলায়। তার শৈশব কাল কেটেছে পাবনাতেই। পরিবারে ভাই বাদশা বুলবুল, বোন পলি সায়ন্তনিও জনপ্রিয় শিল্পী। মা মনোয়ারা বেগমও যুক্ত ছিলেন গানের সঙ্গে।
১৯৯০ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মিল্টন খন্দকারের কথা ও সুরে সেলেক্স-এর ব্যানারে বাজারে প্রথম ডলির একক অ্যালবাম ‘হে যুবক’ বাজারে আসে। মাসুদ পারভেজ প্রযোজিত ‘ঘেরাও’ ছবিতে তিনি প্রথম প্লে-ব্যাক করেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭শ ছবিতে প্লে-ব্যাক করেছেন তিনি। দ্বৈত গানে সবচেয়ে বেশি গেয়েছেন তিনি অ্যান্ড্রু কিশোরের সঙ্গে। ডলি সায়ন্তনীর শ্রোতাসমাদৃত অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে ‘কালিয়া’, ‘নীরব রাতে’, ‘বিরহী প্রহর’, ‘সুখে থেকো’, ‘নিতাইগঞ্জে জমছে মেলা’, ‘বাংলাদেশের মেয়ে’।
বর্তমানে ডলি সায়ন্তনী দেশ-বিদেশের স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত প্লেব্যাকও করছেন।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment