মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ইতোমধ্যেই ২৭৮টিতে জয়লাভ করেছেন ট্রাম্প, যেখানে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট। ট্রাম্পের জয় স্বীকার করে নিয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন।
কিছুক্ষণ আগে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে সেক্রেটারি ক্লিনটন আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমিও জবাবে তাকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছি। এ নির্বাচন ছিল অবিশ্বাস্য, কষ্টকর এবং ঐতিহাসিক।’
তিনি বলেন, আমি প্রতিটি অামেরিকান নাগরিকের প্রেসিডেন্ট হতে চাই। যাতে আমরা একসাথে এ দেশের জন্য কাজ করতে পারি। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় সাথে থাকার জন্য পরিবার ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প।
কেবল হোয়াইট হাউজ নয় এবারের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের দুই কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ পেতে যাচ্ছে রিপাবলিকান পার্টি। নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ আগেই তাদের হাতে ছিল, নতুন করে সিনেটও তাদের দখলে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সংস্থার করা গাদা গাদা জরিপকে মিথ্যা প্রমাণ করে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী এই ব্যবসায়ীকেই চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউজের জন্য বেছে নিয়েছেন মার্কিনিরা।
নির্বাচনের আগে বেশিরভাগ গণমাধ্যমের ধারণা ছিল, দোদুল্যমান রাজ্য বলে পরিচিত ‘ব্যাটল গ্রাউন্ডে’ ভোটের ফল হিলারির পক্ষে থাকবে। কিন্তু এসব রাজ্যের বেশিরবাগ ভোটই গেছে ট্রাম্পের পক্ষে। বিতর্কিত মন্তব্য, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সখ্যতাসহ নানা কারণে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোট হিলারির গাধা প্রতীকেই পড়বে বলে ধারণা করেছিল তারা। কিন্তু সেসবকে উড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্পের পক্ষেই রায় দিয়েছেন অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক।
নির্বাচনের আগে বেশিরভাগ গণমাধ্যমের ধারণা ছিল, দোদুল্যমান রাজ্য বলে পরিচিত ‘ব্যাটল গ্রাউন্ডে’ ভোটের ফল হিলারির পক্ষে থাকবে। কিন্তু এসব রাজ্যের বেশিরবাগ ভোটই গেছে ট্রাম্পের পক্ষে। বিতর্কিত মন্তব্য, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সখ্যতাসহ নানা কারণে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোট হিলারির গাধা প্রতীকেই পড়বে বলে ধারণা করেছিল তারা। কিন্তু সেসবকে উড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্পের পক্ষেই রায় দিয়েছেন অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক।
এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৭৮ টি। অপরপক্ষে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন পেয়েছেন ২১৮ টি ইলেকটোরাল ভোট।
ভোটের প্রাথমিক ফল প্রকাশের শুরু থেকেই ট্রাম্প ও হিলারি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল। তবে পরে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যায়, হোয়াইট হাউসের উত্তরসূরি হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশের আগেই হিলারির সমর্থকদের মুষড়ে পড়তে দেখা যায়। কাঁদতে দেখা যায় অনেক সমর্থককে। সিএনএন অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিউইয়র্কে হিলারির প্রচারণা সদর দপ্তরের পরিবেশ বদলে গেছে। তাঁর সমর্থকেরা কাঁদছেন। বিষণ্ন মনে অনেকে বাড়ি ফিরছেন।
নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর দিকে বেশির ভাগ জরিপেই এগিয়ে ছিলেন হিলারি। তবে নির্বাচনের দিনকয়েক আগে হিলারি-ট্রাম্প হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মেলে। একপর্যায়ে দুয়েকটি জরিপে এগিয়েও যান ট্রাম্প। তবে বেশির ভাগ বিশ্লেষকের রায় ছিল হিলারির পক্ষেই। কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিয়ে অবিশ্বাস্য চমক দেখিয়ে জয় পেলেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া এমন যে, সারা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের সমর্থনও বিজয়ের নিশ্চয়তা দেয় না। মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে এখানে। দুটি অঙ্গরাজ্য ছাড়া বাকি অঙ্গরাজ্যগুলোতে প্রাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রার্থীরা ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বিজয়ী হন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট অর্থাৎ ২৭০টি পেলেই একজন প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেন।
গতকাল মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়াও মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ আসনের সব কটিতে ও উচ্চকক্ষ সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৪ আসনের নির্বাচনে ভোট দেন মার্কিনরা। ফলাফলে দেখা যায়, আগে থেকে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রতিনিধি পরিষদ তাদের হাতেই থাকল।
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা ২৩৫ আসন পেয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ১৭৬ আসন। আর সিনেটে রিপাবলিকানরা ৫১ আসন পেয়েছে। এখানে ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ৪৭ আসন।
তুমুল করতালি দিয়ে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান তার সমর্থকরা। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ৫৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
এদিকে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার খবরে বিশ্ব অর্থনীতিতে তাৎক্ষণিকভাবে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আমেরিকার ডলার আর মেক্সিকোর পেসোর দাম কমে গেছে, দরপতন হয়েছে শেয়ারবাজারেও।
তবে নির্বাচনের ট্রাম্প জয়ী হলে তার গৃহীত নীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের আশা ছিল হিলারি নির্বাচিত হবে। কিন্তু সেই আশার গুঁড়ে বালি পড়ায় ভোট শেষে বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ জয় আমেরিকার ইতিহাসের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁক। নির্বাচনের অাগে প্রায় সবগুলো জনমত জরিপে হিলারি ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। বছরজুড়ে নির্বাচনী প্রচারণার সময় নানা বিতর্কিত ও বিব্রতকর ঘটনার জন্ম দেওয়া ট্রাম্পকেই অবশেষে নিজেদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করল আমেরিকার জনগণ।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment