দীর্ঘদিন ধরে গ্রেডিং পদ্ধতিতে ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করা হলেও ২০১৯ সাল থেকে নম্বর পদ্ধতিতে এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার যুক্তরাজ্যভিত্তিক বোর্ড পিয়ারসন এডেক্সেলের বাংলাদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ফলে এখন থেকে পুরোনো পদ্ধতি (স্টার বা এবিসি) পরিবর্তন করে ব্যান্ড স্কোর পদ্ধতি চালু করা হবে।
জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাগুয়েজ স্টেটিং সিস্টেম (আইইএলটিএস) পরীক্ষারও ফল মূল্যায়নের আদলে প্রকাশ করা হয় ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল। জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (জিসিএসই) বা ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার ফল মূল্যায়নে নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এডেক্সেলের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার সাইদুর রহমান বলেন, পুরোনো স্টার বা এবিসি পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়নে মেধার প্রকৃত বিষয়টি উঠে আসছে না। এ কারণে ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার মূল্যায়নে স্কোর না নম্বর পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জিসিএসই পরীক্ষায় নতুন এ গ্রেডিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। ছাত্রছাত্রীরা তখন যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সেজন্য আমরা আগে থেকেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। নতুন পদ্ধতি শুধু ‘ও’ লেভেলে (বাংলাদেশে এসএসসি সমমান) প্রবর্তন করা হচ্ছে। ‘এ’ লেভেলে (উচ্চ মাধ্যমিক সমমান) নয়।
তথ্যমতে, বাংলাদেশে ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই ব্রিটিশ কারিকুলামে অধ্যয়ন করে। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এডেক্সেল এসব শিক্ষার্থীর বোর্ড হিসেবে কাজ করে। উভয় বোর্ডই ব্রিটিশ সরকারের নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করবে। তবে এখন এডেক্সেল এটি বাস্তবায়ন করছে। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের ভেতরে নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করবে। কিন্তু কবে নাগাদ তারা এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবে তা এখনও জানায়নি।
জানা গেছে, বাংলাদেশে জিসিএসই বা ‘ও’ লেভেলে তুলনামূলকভাবে এডেক্সেলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। বছরে দু’বার- জানুয়ারি ও জুনে এ পরীক্ষা হয়। গড়ে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এডেক্সেল ২০১৬ সালেই যুক্তরাজ্যে তিনটি ইংলিশ, ইংলিশ লিটারেচার ও গণিত বিষয়ে পরীক্ষার ফল নতুন পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়। নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে জানা গেছে, সর্বোচ্চ ভালো ফল করা শিক্ষার্থীকে স্বীকৃতি ও আলাদা করতে নতুন এ গ্রেডিং পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে, যা ৯ দ্বারা প্রকাশ করা হবে। মধ্যম মানের শিক্ষার্থীদের আগে গ্রেড ‘বি’ ও ‘সি’ দিয়ে মূল্যায়ন করা হতো। ওই স্তরে নম্বরে বড় ধরনের পার্থক্য আছে। এজন্য এ দুই স্তরকে ভেঙে তিনটি করা হচ্ছে। এখন থেকে মধ্যমানের ছাত্রছাত্রীদের গ্রেডের মাধ্যমে ১ থেকে ৯ পর্যন্ত নম্বরের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়া লিখিত পত্রে এ পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়, নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য জানতে পারবেন, যা ‘এ’ লেভেল শিক্ষার্থীর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। উচ্চশিক্ষায়ও এটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত যুগ্ম সচিব সালমা জাহান জাগো নিউজকে বলেন, ওই পদ্ধতির প্রয়োগ বা সমমানটা কী হবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তত্ত্বাবধান করবে। জানা গেছে, ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কান্ট্রি ম্যানেজার সাইদুর রহমান বলেন, নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে ধারণা দিতে একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছি। উভয় পদ্ধতির তুলনা ও পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা স্তরে ভর্তির জন্য বিদেশে গেলেও কোন সমস্য হবে না। সব জায়গায় মূল্যায়ন পদ্ধতি পাঠানো হবে।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment