বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খোঁজে শেকড়ের টানে নেদারল্যান্ডস থেকে বাংলাদেশে আনোয়ারা - SongbadProtidin24Online.com

সর্বশেষ সংবাদ

SongbadProtidin24Online.com

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

test banner

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Monday, April 2, 2018

বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খোঁজে শেকড়ের টানে নেদারল্যান্ডস থেকে বাংলাদেশে আনোয়ারা

বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খোঁজে শেকড়ের টানে নেদারল্যান্ডস থেকে বাংলাদেশে আনোয়ারা
আমাদের মধ্যে অনেকেই যখন বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে রেখে আসি বৃদ্ধ নিবাসে, তখন আনোয়ারা নামের এক নারী তার বিদেশের সুখের জীবন ছেড়ে ছুটে আসেন বৃদ্ধ পিতা-মাতার খোঁজে শেকড়ের টানে।
গত ৩০ মার্চ দেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে আনোয়ারাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করা হয়। সেই প্রতিবেদনের অংশটুকু সংবাদ প্রতিদিন২৪ অনলাইন ডটকম এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের টঙ্গীর কাছাকাছি একটি মাতৃসদন থেকে ৫ বছর বয়সে আনোয়ারাকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন নেদারল্যান্ডসের এক দম্পতি মিস্টার এভার ডেকার ও মিসেস মেরিয়েন রেজনেভেল্ট।
আনোয়ারার বর্তমান বয়স ৪৫ বছর। নার্সিংয়ে গ্রাজুয়েশন করে বর্তমানে তিনি নেদারল্যান্ডসের একটি হাসপাতালে সেবিকার কাজ করছেন।
ছোটবেলায় নেদারল্যান্ডসে গিয়ে পালক বাবা-মায়ের কাছে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে বড় হতে থাকে আনোয়ারা। কিন্তু সব সময় কিছু স্মৃতি তাকে তাড়িত করতো। বিশেষ করে আশ্রয়কেন্দ্রের খাদ্যাভাব এবং একটি শিশুর কথা তার অত্যন্ত মনে পড়তো তার।
উল্লেখ্য, সেই শিশুটি ছিল তারই ছোট বোন শম্পা। এবং একই সময় সেই বোনকেও নেদারল্যান্ডসের অন্য একটি পরিবার দত্তক নিয়েছিল। তারপর থেকেই দুই বোন বিছিন্ন হয়ে যায়। বড় হয়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকটি প্রশ্ন আনোয়ারার মনকে অস্থির করে তোলে, কে তার প্রকৃত বাবা-মা, তারা কোথায়, কেমন আছেন? আমি কি কখনও তাদের দেখা পাবো, জানতে পারবো আমার ইতিহাস?
একবার নেদারল্যান্ডসের একটি এলাকায় একটি মেয়েকে দেখে আনোয়ারার মনে হয় এই মেয়েটিই দত্তক হিসেবে আসা তার ছোট বোন। ১৫ বছর চেষ্টা করার পর অবশেষে পালক মা-বাবার সহযোগিতায় আনোয়ারা ও শম্পার ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তারা আসলেই দুই বোন।
আনোয়ারা ফিরে পায় তার হারিয়ে যাওয়া পরিবারের একজনকে। বোনকে পেয়েও আনোয়ারা ভুলতে পারেনি তার দেশের কথা। তাই বার বার ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে শেকড়ের টানে। মা-বাবার খোঁজে এ বছরের ২২ জানুয়ারিতে আনোয়ারা পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশে আসেন। টঙ্গী থেকে তাকে দত্তক নেয়া হয়েছে বলে সে টঙ্গীর দত্তপাড়া, আড়াইহাজার ও লালুরকান্দি নামক এলাকাগুলো চষে বেড়িয়েছেন, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।
১৯৯২ সালে ১৯ বছর বয়সে সে প্রথম শেকড়ের টানে বাংলাদেশে ছুটে আসে। ১৯৯৮ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আনোয়ারার দুটি সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু দু'বারই নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই তারা ভূমিষ্ঠ হয়। অনেক চেষ্টা করেও তাদের বাঁচাতে পারেনি আনোয়ারা। মৃত্যু ঝুঁকির কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শে আর সন্তান নেয়নি আনোয়ারা।
সে তার স্বামীকে নিয়ে ২০০৬ সালে আবারও বাংলাদেশে আসে। এবং বাংলাদেশ থেকেই দুটি কন্যা শিশুকে দত্তক হিসেবে নিয়ে যায় সে। বাংলাদেশ থেকে দত্তক নেয়ার কারণ হিসেবে আনোয়ারা বলে, বাংলাদেশই আমার শেকড়, বাংলাদেশই হবে তাদের মাতৃভূমি।
২০১৪ সালেও বাংলাদেশে এসেছিলেন আনোয়ারা। সেই সময়ও ঢাকার বহু প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বাবা-মায়ের সন্ধান না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান আনোয়ারা।
এ বছরও প্রায় ১৫ দিন খোঁজাখুঁজি করেও বাবা-মায়ের সন্ধান না পেয়ে আনোয়ারা যোগাযোগ করেন ইত্যাদির সঙ্গে। তার ধারণা ইত্যাদিতে প্রচারিত হলে তার বাবা-মা বা স্বজনদের মধ্যে কেউ যদি বেঁচে থাকেন তাহলে হয়তো তাদের সঙ্গে যোগাযোগও হতে পারে।
আনোয়ারা বলেন, যদিও নেদারল্যান্ডেসে আমি আমার পালক পিতা-মাতা স্বামী এবং দত্তক কন্যাদের নিয়ে খুব সুখেই আছি। তবুও আমার অন্তর এখনও বার বার কেঁদে উঠে বাংলাদেশে আমার বাবা-মা স্বজনদের জন্য। মনে হয় তাদের পেলেই আমার জীবনটা সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে।
ইত্যাদির দর্শকদের উদ্দেশ্যে হানিফ সংকেত আনোয়ারাকে কিছু বলতে বললে ভাঙা ভাঙা বাংলায় তিনি বলে, আমি আমার মা-বাবাকে পেতে চাই, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। সূত্র : ইত্যাদি
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here