রাতারাতি তারকায় পরিণত হয়েছেন বাংলাদেশী ১৯ বছর বয়সী পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। সাতক্ষীরার অজ-পাড়া পাঁ থেকে উঠে আসা এই পেসারের মধ্যে যে কী আছে এখনও বুঝে উঠতে পারেনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালি ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ ভারত। শুধু বাংলাদেশই নয়, মুস্তাফিজের বল নিয়ে গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে।
রাতারাতি যেমন তারকা ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছেন, তেমনি ব্যাপক জনপ্রিয় ক্রিকেটারেও পরিণত হন তিনি। বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে মুস্তাফিজের ভক্তকুল তৈরী হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। কেউ তাকে তুলনা করছেন ওয়াসিম আকরামের সাথে। কেউ বলছেন, যেন ওয়াকার তার সোনালি যুগের ডেলিভারিগুলো দিচ্ছেন।
তো এমন জনপ্রিয় ক্রিকেটারকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হবে তা কি করে হয়! প্রথম দিন থেকেই তাকে নিয়ে আলোচনার ঝড়। ফেসবুক ব্যবহার করেন আর মুস্তাফিজকে নিয়ে কোন স্ট্যাটাস দেননি কিংবা কোন স্ট্যটাসে লাইক-কমেন্ট করেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়।
মুস্তাফিজের এই তুমুল জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছেন একশ্রেনীর অসাধু ‘লাইক’ ব্যবসায়ী। সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ফেসবুকে ‘লাইক’ ব্যবসা একটি অতি পুরনো বিষয়। একটি পেজ বানিয়ে সেটিকে যদি আপনি পপুলার করে তুলতে পারেন, সেই পেইজে যদি প্রচুর মানুষকে ভিজিট করাতে পারেন, তাহলে সেটা দিয়ে অনায়াসে প্রমোশনাল অনেক কিছু করা সম্ভব।
অনেক কোম্পানি আছে যারা অনলাইনে নিজের পন্যকে পরিচিত করে তোলার জন্য ফেসবুকের সাহায্য নেন। কারণ এখন প্রায় প্রত্যেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরই একটা করে ফেসবুক আইডি আছে এবং সবাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময় ফেসবুকে ব্যায় করে। এত মানুষকে এক সাথে একই জায়গায় পাওয়ার এমন সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন না ইন্টারনেট মার্কেটাররা।
কারও পন্যের প্রচার এবং প্রসারের কাজে এখন টিভি-পত্রিকার বিজ্ঞাপনের চেয়েও ফেসবুকে প্রচারনা অনেক বেশি কাজ দেয়। এ বিষয়টাকে পুঁজি করেই অসাধু ‘লাইক’ ব্যবসার বিষয়টা গড়ে উঠেছে।
মুস্তাফিজ এখন সবচেয়ে হট কেক। তার জনপ্রিয়তা হঠাৎ করেই আকাশচুম্বী। তাকে দিয়ে ফেসবুকে একটি পেজ বানালে অনায়াসেই সেখানে হাজার হাজার নয়, লাখ লাখ ব্যবহারকারীর আগমণ ঘটবে। সবাই চাইবে মুস্তাফিজের যে কোন কিছুর সঙ্গে আপডেট থাকতে। এ কারণেই তারা মুস্তাফিজের নামে তৈরী করা ফ্যান পেজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকতে চায়।
এ বিষয়টাকে পুঁজি করেই গত এক সপ্তাহে ফেসবুকে মুস্তাফিজের নামে কত শত ফ্যান পেজ যে খোলা হয়ে গেছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। সংখ্যাটা গুনতে বসলে ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসতে হবে। বাংলামেইলের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়, কতটা ফ্যান পেইজ আছে সেটা গুনে বের করার। ৫৫০টি পেজ গোনার পর ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে এ উদ্যেগ বন্ধ করে দিতে হয়।
পাঠক! আপনিও চাইলে গুনে দেখতে পারেন মুস্তাফিজের নামে তৈরী করা ফ্যান পেজের সংখ্যা। এই লিংকে গিয়ে… https://www.facebook.com/search/str/mustafizur%2Brahman/keywords_pages
উল্লেখ্য, মুস্তাফিজের নামে ফ্যান পেজ খুলে সেটাকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে এরপর নাম পরিবর্তন করে লাইক ব্যবসায়ীরা সহজে কোন কোম্পানির কাছে সেটা বিক্রি করে দেবে। কিন্তু এতদিন মুস্তাফিজের পেইজ জেনে যারা এর সাথে লাইক দিয়ে যুক্ত হয়েছেন, তারা তো জানেন না ভেতরে ভেতরে কী হয়ে গেছে। অপরদিকে যে কোম্পানি পেইজ কিনে নেবে তারা আরামসে নিজেদের পন্যের বিজ্ঞাপন করে যাবে।
মাসুদুর রশিদ নামে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন মার্কেটার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমরা বাংঙ্গালিরা কি কখনো লাইক ব্যাবসা ছাড়তে পারব না?? লাস্ট দুই ম্যাচে আমাদের মোস্তাফিজুর রহমানের অসাধারন সাফল্যের পর লাইক ব্যবসায়ীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মোস্তাফিজুর রহমানের নামে ফেসবুক পেজ খোলায়। আসল ফ্যানপেজ যে কোনটা সেটা মনে হয় না মোস্তাফিজ নিজেও জানে না!!’
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment