সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকীর টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদীয় ১৩৩ নম্বর আসনটি শূন্য ঘোষণা করেছেন স্পীকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনে মাগরিবের নামাজ বিরতির পর আসনটি শূণ্য ঘোষণা করেন তিনি।
স্পীকার বলেন, লতিফ সিদ্দিকী আমার নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করেছে। আমি সেটা গ্রহণ করেছি। সংসদীয় বিধানের ৬৭টির ২ ধারা অনুযায়ী কোন সংসদ সদস্য সংসদে উপস্থিত হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিলে জমা দেওয়ার সময় থেকে তা কার্যকর হয়ে যায়। সেই বিধান অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর তারিখে সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। তাই আসনটি শূণ্য হয়েছে।
এর আগে গত ১ সেপ্টম্বর অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনে বক্তব্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন দল ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কৃত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। সেদিন আবেগঘন বক্তব্য শেষে আরদালির মাধ্যমে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে সংসদ থেকে বের হয়ে যান লতিফ সিদ্দিকী। সন্ধ্যা সাতটা ২৪ মিনিট থেকে সাতটা ৩৯ মিনিট পর্যন্ত বক্তব্য দেন তিনি।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার পর মন্ত্রিত্ব হারান এবং দল থেকে বহিষ্কৃত হন লতিফ সিদ্দিকী।
আওয়ামী লীগ থেকে তার সংসদ সদস্যপদ বাতিলের আবেদন করা হলে স্পিকার তা নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনে পাঠান। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নেই বলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন লতিফ সিদ্দিকী। হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেন।
এরপর তিনি লিভ টু আপিল করলে ২৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করেন। একই দিন তিনি নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে বলেন, তিনি নিজেই পদত্যাগ করবেন। এ বিষয়ে শুনানির প্রয়োজন নেই।
সেদিন সংসদে লতিফ সিদ্দিকী পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমি মুসলমান, আমি বাঙালি, আমি আওয়ামী লীগার। এ পরিচয় মুছে দেওয়ার মতো কোনো শক্তি পৃথিবীর কারও নেই। কারণ, এ আমার চেতনা, আমার জীবনবেদ, প্রাণের রসদ, চলার সুনির্দিষ্ট পথ।’
নির্বাচন কমিশনে পাঠানো স্পিকারের চিঠির বিষয়ে আপত্তি তুলে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় বর্ণিত নির্দেশনা হলো কোনো ব্যক্তির সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও থাকা বিষয়ক।
এ ক্ষেত্রে ৬৬ অনুচ্ছেদের ২ দফা এবং সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের নির্দেশনার ব্যাপারটি স্পষ্ট। স্পিকারের চিঠিতে সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন ও সংবিধানের অপব্যাখ্যা হয়েছে। স্পিকার সংসদ সদস্যের আসন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া যথাযথ কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যায়।
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘মনে হয়েছে, আমার নেতার অভিপ্রায়, আমি আর সংসদ সদস্য না থাকি। কর্মী হিসেবে নেতার একান্ত অনুগত ছিলাম। বহিষ্কৃত হওয়ার পর এর ব্যত্যয় কিংবা ব্যতিক্রম সমীচীন মনে করি না। আমার প্রতিবাদ ছিল প্রতিকার পাওয়ার, এখন দ্বিধাহীন কণ্ঠে কারও বিরুদ্ধে কোনো ঘৃণা-বিদ্বেষ উগড়ে না দিয়ে কোনো অভিযোগ উত্থাপন না করে হৃষ্টচিত্তে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের আসন ১৩৩, টাঙ্গাইল-৪ সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
সতর্কবাণীঃ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment