মিরপুর প্রতিনিধিঃ রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে এনআইডি জালিয়াতি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা অর্থের বিনিময়ে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে খেলাপি গ্রাহকদের সহায়তা করতেন।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর,২০২০) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম) সহকারী কমিশনার মধুসুদন দাশ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন— মো. মজিদ (৪২), মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪১), মো. সুমন পারভেজ (৪০), সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর (৩২) ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম (২৬)। তাদের কাছে ১২টি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। শনিবার রাত পৌনে ৮টায় মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের ডি-ব্লক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মধুসুদন দাশ আরও বলেন, সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলামকে ই-জোন কোম্পানির মাধ্যমে ২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশনের অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে তারা সহজেই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি ও সেন্ট্রাল সার্ভারে এন্ট্রি দিতে পারতেন। জালিয়াতির মাধ্যমে একই ব্যক্তির দুইটি ভিন্ন এনআইডি নম্বর তৈরি হওয়ায় ঋণ আবেদনে খেলাপি গ্রাহকদের তথ্য ব্যাংকে গোপন থাকতো।
এই কাজ করে দিতে চুক্তি করতেন সুমন ও মজিদ। জাল এনআইডি বাবদ ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা এবং ব্যাংক থেকে পাওয়া মোট ঋণের ১০ শতাংশ নিতেন চক্রের সদস্যরা। নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে এন্ট্রি করতে প্রতিটি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করে নিতেন সিদ্দার্থ ও আনোয়ারুল। তারা এ পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০টি দৈত জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে— বলেন মধুসুদন দাশ।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে কোনো ব্যক্তির নাম দুই বার নিবন্ধিত হলে তা মুছতে বছর খানেক সময় লেগে যায়। এই সময়ের মধ্যে খেলাপি গ্রাহকরা অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতেন। সম্পূর্ণ নতুন এনআইডি নম্বর হওয়ায় তাদের ঋণ খেলাপের বিষয়টি ব্যাংক ভেরিফিকেশনে ধরা পরতো না। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা বা ছবি এবং ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment