চলছে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি : ফাঁকা মিরপুরের বেনারসি পল্লী !!!!! - SongbadProtidin24Online.com

songbad+cover

সবার আগে নতুন সংবাদ প্রতিদিন

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন দিন

demo-image

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Wednesday, June 14, 2017

চলছে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি : ফাঁকা মিরপুরের বেনারসি পল্লী !!!!!

Responsive Ads Here
Benaroshe-palli
চলছে ঈদের কেনাকাটা। তাই কাপড় ব্যবসায়ীদের কাছে এর চেয়ে বড় ব্যবসায়ী মৌসুম আর নেই। কিন্তু মিরপুরের বেনারসি পল্লী এক প্রকার ক্রেতাশূন্য। ক্রেতা সংকটে অলস সময় কাটাচ্ছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। দোকানের সামনে ক্রেতাদের ডাকবেন বলে অপেক্ষায় আছেন বিক্রেতারা। কিন্তু ক্রেতার অভাবে খাঁ খাঁ করছে পুরো এলাকা। দু-একজন ক্রেতা থাকলেও দাম শুনে দোকান থেকে উঠে যাচ্ছেন।

ঈদ মৌসুমে বেনারসি শিল্পের এমন চিত্র সুসংবাদ নয়। এর পেছনে অন্যতম কারণ মিরপুরে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সাধারণত রোজা থেকে মানুষ কোন ভোগান্তি পোহাতে চায় না। রাজধানী জুড়ে তীব্র যানজট নিত্য ঘটনা।
কিন্তু মিরপুরের পুরো রাস্তা জুড়ে যেভাবে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে, তাতে মিরপুর এলাকায় সহজে কেউ আসতে চাচ্ছে না। এর ফলে বেনারসি পল্লীর ব্যবসা জমে উঠে না।
বুধবার সরেজমিনে মিরপুরের বেনারসি পল্লী ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে নিজেদের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আশা নিয়ে বসে আছেন, ক্রেতা ঢল নামবে। কিন্তু এখনও সে চিত্র দেখা যায় নি।
বেনারসি পল্লীর ১৬ বছরের পুরনো দোকান শীতল শাড়ি সেন্টার। দোকানে বিয়ের বেনারসি, টাঙ্গাইল, কাতান, জামদানি, ফুলকলি কাতান, দুলহান কাতান, মিরপুরি রেশমি কাতান, মিলেনিয়াম কাতান, বেনারসি কসমস, অরগেন্ডি কাতান, রিমঝিম কাতান, প্রিন্স কাতান, টিস্যু কাতান, মিরপুরি গিনিগোল্ড কাতান, জর্জেট গিনি গোল্ড কাতান, চুনরি কাতান, অপেরা, ফিগা কত যে বাহারি নাম। দামের বহরও বেশ চওড়া। দাম আড়াই-তিন হাজার টাকা থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত।
দোকানের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ জোবায়ের বলেন, দাম বেশি হলেও মানের দিক থেকে আমরা আপোষ করি না। তারপরেও দিন দিন লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইন্ডিয়ার মার্কেটে অবাধে ঢুকছে বাংলাদেশি ক্রেতারা। এ কারণেই আমাদের দেশীয় মার্কেটে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।
তিনি অভিযোগ করেন, মানুষ এই রোজার মধ্যে মিরপুরে আসতে ভয় পায়। এক ঘণ্টার রাস্তা ৩ ঘণ্টায়ও শেষ হয় না। ফলে মানুষ বেনারসি পল্লীতে আসতে চাচ্ছে না। বিক্রি জমছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুরের রাস্তা জুড়ে চলছে উন্নয়নের মহাব্যস্ততা। এক সঙ্গে কাজ করছে, মেট্রোরেল, ওয়াসা ও তিতাস। এক রাস্তা বারবার খুড়ে আবার রিপেয়ার করা হচ্ছে। ফলে সরু রাস্তায় চলাচল অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। রাস্তায় গাড়ি চলছে খুব ধীরে ধীরে । এজন্য জ্যাম সব সময় লেগেই থাকে।

ব্রাইডাল শাড়ি সেন্টারের মালিক সৈয়দ জিয়াউদ্দিন জানান, আগে ঈদ ও বিয়ের মৌসুমে প্রতিদিন ১ থেকে দেড় লাখ টাকা বেচাকেনা করেছি। আর এখন দিনে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকাও বিক্রি হয় না। মরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। কম দাম পাওয়ায় তাঁতিরাও প্রোডাকশন দিতে চায় না। ঐতিহ্যবাহী বেনারসি শিল্পের স্বর্ণালি দিন ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করে এ ব্যবসায়ী বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ শিল্প বাঁচানো যাবে না। তখন হয়তো ঠাঁই নেবে পাঠ্যপুস্তক কিংবা জাদুঘরের উপকরণ হিসেবে।
দোকানে বসে ঝিমাচ্ছিলেন শফিকুর রহমান। কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে বসে আছি। এখনো বৌনি করতে পারিনি। অথচ অন্যান্য মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। এমন করে চললে কদিন পর তো মালিক আমাদের বেতন দিয়ে রাখবেই না। কর্মহীন হয়ে পড়বে এ পাড়ার অনেকেই।
ভাগ্নির বিয়ের জন্য পল্লবী থেকে লেহেঙ্গা কিনতে এসেছেন রাশীদা পারভীন। তিনি বলেন, এখানে আসা বিয়ের কেনাকাটা করতে। তবে মার্কেট ঘুরে যা দেখলাম তাতে মনো হলো মানের তুলনায় দাম বেশি রাখছেন বিক্রেতারা।
তিনি বলেন, এখানে আসতে অনেক কষ্ট। রাস্তার যে অবস্থা তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। অনেকে এতো কষ্ট করে আসতে চায় না বলেও জানান তিনি।
প্রায় ২৫ বছর ধরে বেনারশি বুনন তাঁতি মো. ইয়াসিন। দুই বছর হলে বুনন ছেড়ে কাপড়ের ব্যবসা ধরেছেন তিনি। জানালেন, ঠিকমত মজুরি পাইতাম না। পরিবার নিয়ে পেট চালানো দায় হয়ে যাচ্ছিল। তাই বাপ-দাদার পেশা বুনন ছেড়ে এখন কাপড়ের ব্যবসা করছি। এখন অন্তত পরিবার চালাতে পারছি।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad