মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে মুসলমানের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন ও অব্যাহত নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তারা বাংলাদেশ সরকারসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের নিকট প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায়।
আজ সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন এবং কর্মসূচী ঘোষণা করেন, হেফাজতে ইসলাম মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
অন্যান্যদেও মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব. মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, মাওলানা ইসহাক মেহরিয়া, মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা হাবিবুল্লাহ নদভী, মাওলানা হাফেজ ফায়সাল, মুফতি হাসান মুরাদাবাদী, মাওলানা মনজুরুল কাদের চৌধুরী, মাওলানা সরোয়ার আলম, মাওলানা জয়নাল আবেদীন কুতুবী, মাওলানা কারী মুবিনূল হক, মাওলানা আনম আহমদুল্লাহ, মাওলানা ইউনুস, মাওলানা জুনাইদ জওহার, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, মুফতি সরোয়ার আজম, মাওলানা ওসমান কাসেমী, কারী আবু রায়হান, মাওলানা মোস্তাক মাদানী প্রমূখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর মিয়ানমার সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সন্ত্রাসী বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত ফ্যাসিবাদী জুলুম ও রাষ্ট্রীয় গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। নিরীহ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি আরকানের হিন্দুদের ওপরও সম্প্রতি হামলা হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের নৃশংসভাবে হত্যা করে শরীর টুকরো টুকরো করে নাফ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বক্তব্যে বিশ্ব শক্তির সমালোচনা করে বলা হয়, আরাকানে এই গণহত্যার সংবাদ বিশ্বমিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। দু’চারটি সচিত্র সংবাদ দেখলেই কোনও বিবেকবান মানুষ স্থির থাকতে পারেন না। অথচ মুসলিমদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ সরকারপ্রধানগুলো ক্ষমতার মোহ ও রাজনৈতিক স্বার্থে মায়ানমার সরকারের একতরফা হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরোচিত অত্যাচারের ব্যাপারে বরাবরই মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে।
মিয়ানমারে মুসলিম জনগোষ্ঠির ইতিহাস তুলে ধরে বলা হয়, ১৯৪৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ, আবুল বাশার, আব্দুল গাফ্ফার, জোহরা বেগম প্রমুখ আরাকানের মুসলিম প্রধান এলাকাগুলো থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশটির পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এর পর ১৯৯০ সালে যখন সামরিক বাহিনীর অধীনেই প্রথমবারের মতো বহুদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সে নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের নিজস্ব রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এন্ড হিউম্যান রাইটস পার্টি থেকেই প্রার্থী হওয়ার অনুমতি পান এবং নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে উত্তর আরাকান থেকে শামসুল আনোয়ার, নুর আহমদ, মোহাম্মদ ইবরাহিম ও ফজল আহমদ নামে ৪ জন পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। বুথিডং থেকে নির্বচিত এমপি শামসুল আনোয়ারকে অং সান সুচি ১৯৯৮ সালে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে ‘পিপলস পার্লেমেন্টে’র সদস্য করেন।
এখন প্রশ্ন হলো, নাগরিক না হলে রোহিঙ্গারা এমপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলেন কী ভাবে? ভোট দিলেন কীভাবে? রোহিঙ্গা প্রতিনিধিগণ কাদের ভোটের নির্বাচিত হয়েছিলেন?
সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলা হয়, একটি মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবি হলো, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তথা সর্বস্তরের মুসলমানদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মিয়ানমার সরকারের গণহত্যা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। রোহিঙ্গাদের সেদেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য কুটনৈতিক পদক্ষেপ জোরদার করুন।
আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে, জাতিসংঘ, ওআইসিসহ বিশ্বসংস্থাসমূহকে আরাকানের মুসলমানদের মানবিক অধিকার রক্ষায় কার্যকরি ভূমিকা পালন করার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment