রমজান মাসব্যাপী রোজা পালন করার পর রোজাদারের জন্য রয়েছে ঈদ বা আনন্দ। শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুমিন মুসলমান পুরুষরা দলে দলে ঈদগাহে একত্রিত হয়। ঈদের নামাজ আদায় করে, পরস্পর কুশল বিনিময় করে। কিন্তু নারীদের বেলায় করণীয় কী? তারা কি ঈদগাহে যেতে পারবে বা ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবে? নারীদের ঈদের নামাজ আদায়ের হুকুমই বা কী?
হ্যাঁ, মুসলিম নারীরা ঈদগাহে যেতে পারবে, ঈদের নামাজ পড়া এবং দোয়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম এমনটিই নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে-
হজরত উম্মে আতিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এ মর্মে আদেশ করেছেন, আমরা যেন মহিলাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাতে নামাজের জন্য বের হয় এবং নামাজে অংশগ্রহণ করেন। পরিণত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহবাসিনীসহ সবাই। তবে ঋতুবতী মেয়েরা নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকবে তবে কল্যাণ ও মুসলিমদের দোয়ায় অংশ নিবে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল ! আমাদের মাঝে কারো কারো ওড়না নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে তার অন্য বোন থেকে ওড়না নিয়ে পরিধান করবে।’ (মুসলিম)
তবে নারীদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়, বরং তা সুন্নাত। কেউ কেউ বলেছেন নারীদের ঈদের নামাজ পড়া নফল ইবাদত। মেয়েদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ সম্পর্কে মাজহাবগুলোতে রয়েছে মত পার্থক্য। আর তাহলো-
> ইমাম শাফেঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে নারীদের ঈদগাহে নামাজ আদায় সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
> হানাফি মাজহাব মতে, যদি কোনো নারী ঈদের নামাজ পড়ে তবে তা নফল হবে। আর নফল নামাজ জামাআতে পড়া মাকরূহ। সুতরাং ফেতনার আশংকায় নারীদের ঈদের নামাজ আদায় করাও মাকরূহ।
> হানাফি মাজহাব মতে, যদি কোনো নারী ঈদের নামাজ পড়ে তবে তা নফল হবে। আর নফল নামাজ জামাআতে পড়া মাকরূহ। সুতরাং ফেতনার আশংকায় নারীদের ঈদের নামাজ আদায় করাও মাকরূহ।
বিশেষ করে
আমাদের দেশের ঈদগাহগুলোতে নারীদের ঈদের নামাজ আদায়ের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। সেক্ষেত্রে ফেতনা ও বেপর্দার আশংকাই বেশি। আর এ কারণে নারীদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ না করাই উত্তম।
আমাদের দেশের ঈদগাহগুলোতে নারীদের ঈদের নামাজ আদায়ের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। সেক্ষেত্রে ফেতনা ও বেপর্দার আশংকাই বেশি। আর এ কারণে নারীদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ না করাই উত্তম।
নারীদের যদি ঈদের জামাআতে অংশগ্রহণের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়; সেক্ষেত্রে নারীরাও ঈদের জামাআতে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
যেমনিভাবে জুমআর নামাজে নারীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুমোদন রয়েছে। মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববিতে নারীরা জামাআতে নামাজে অংশগ্রহণ করে থাকে। সব যুগের সব আলেম-ওলামার সম্মতিক্রমেই তা সাব্যস্ত হয়েছে।
ঈদের জামাআতে নারীদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুমোদন দেননি বরং তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তা ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক করা হয়নি, কিন্তু তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু সমাজের ঈদগাহগুলোতে নারীদের জামাআতে অংশগ্রহণের কোনো ব্যবস্থাই করা হয় না। যে কারণে নারীরা ঈদগাহে যেতে বা ঈদের জামাআতে অংশ নিতে পারে না। যেখানে ব্যবস্থাপনা নেই সেখানে নারীদের ঈদের জামাআতে অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগও নেই।
ঈদের জামাআতে অংশগ্রহণ করতে হলে অবশ্যই পর্দার ব্যবস্থা থাকতে হবে। যদি পর্দার ব্যবস্থা না থাকে তবে নারীদের ঈদের নামাজে অংশগ্রহণে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের সঠিক বুঝ লাভের তাওফিক দান করুন। যে সব নারীরা ঈদের জামাআতে অংশগ্রহণ করতে চায়, তাদের জন্য পর্দার সঙ্গে ফেতনামুক্ত হয়ে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া সব মুমিনা নারীদেরকে যাবতীয় ফেতনা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment