জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: নতুন হল নির্মাণ এবং নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে (জবি) স্থায়ীভাবে লিজ দেওয়ার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে রাশেদুল ইসলাম, রাইসুল ইসলাম নয়ন ও শফিকুল ইসলাম নামে তিন শিক্ষার্থী এক বিবৃতি দিয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর আগে, শিক্ষার্থীরা নয়াবাজার মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। সকাল ১০টার দিকে তারা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওয়ানা দিলে বংশালে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করে। করে লাঠিচার্জও।
প্রতিবাদে নয়াবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার পর সে কর্মসূচি শেষ করেন তারা। তার আগে দুপুর ১২টার দিকে দু’শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের জবি শাখার সভাপতি এস এম সিরাজুল ইসলাম।
বিবৃতিতে তিন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সকল পরীক্ষা বর্জন করে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘট পালন করা হবে।
তারা জানিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য বা ঘোষণা না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এই ‘ন্যায্য যৌক্তিক’ দাবির আন্দোলন চলছে, চলবে।
এদিকে, দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি মানোয়ার হোসেন শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবিকে ‘ন্যায্য’ বলে তাতে সমর্থন জানিয়েছেন।
কলেজ থেকে ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি হল ছিল প্রভাবশালীদের দখলে।
বিভিন্ন সময়ে সেসব হল উদ্ধারের দাবি উঠলেও ২০০৯ সালে শিক্ষার্থীদের জোরালো আন্দোলনে সরকারের উচ্চ মহলের টনক নড়ে। ওই সময় একাধিক হল উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ করে। কিন্তু তা কার্যকর করেনি ঢাকা জেলা প্রশাসন।
এরপর ২০১১ ও ২০১৪ সালে আবারও জোরালো আন্দোলন হলে দু’টি হল পুনরুদ্ধার হয়। কিন্তু তা এখনও ব্যবহার উপযোগী করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবার আরেকটি হল আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তা নিয়ে দেখা যায়নি কোনো পরিকল্পনা। দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ রয়েছে নতুন দু’টি হল নির্মাণের উদ্যোগেও।
এবার ২০ দিন ধরে নানা উপায়ে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিকে প্রশাসনিক কার্যক্রমে বিঘ্ন না হলেও গত তিন দিন ধরে ধর্মঘট পালনের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম।
এ আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামী লীগ ও বামপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সমর্থন রয়েছে।
সতর্কবাণীঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
No comments:
Post a Comment